Friday 4 July 2014

দাদার কীর্তি-১

চারপাশে দাদারা যা সব এক একটি কীর্তির নমুনা দিয়ে চলেছেন তাতে তো দাদা-দিদিদের কীর্তি সম্পর্কে কিছু বলতে যাওয়া মানে এই নগন্য ব্লগটির অত্যন্ত ক্ষমাশীল পাঠকরাও আর দ্বিতীয়বার এটি খুলে দেখবেন না। কিন্তু বিশ্বাস করুন আমি আমার নিজের এক দাদার কথাই বলতে বসেছি আপনাদের। তার সাথে খবরের কাগজের দাদা-দিদিদের কোনো সম্পর্ক নেই। নেহাত খবরের কাগজে দিনরাত দাদাদের কীর্তি দেখে শুনে মনে হলো আমিও এই বাজারে আপনাদের সাথে আমার এক দাদার কিছু মনে রাখার মত কীর্তির গল্প করে নি।

জন্মসুত্রে আমি এই দাদাটিকে লাভ না করলেও আমার এই দাদাটিকে আমি বড়ই শ্রদ্ধা করি। তার প্রথম ও প্রধান কারণ তাঁর মত সুন্দর মানুষ আমি খুব কমই দেখেছি। ভগবান যে কয়েকটি বিষয়ে আমায় দুহাত তুলে আশির্বাদ করেছেন তার মধ্যে এরকম কয়েকটি লোকজনের সাথে জীবনে আমার দেখা হওয়াটা একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলে আমার মনে হয়। দাদাটি আমার অম্লান বদনে নিজের কৃতিত্ব অন্যকে দিয়ে দিতে পারে। বললে বলবে "ঠিক আছে, ও-ও তো আমায় হেল্প করেছে কাজটা করতে"। অপরের দোষের ভাগ অহেতুক বিনা বাক্যব্যয়ে নিজে নিয়ে নিতে পারে। যুক্তিটা এক্ষেত্রে "ঠিক আছে....অত কথার কি আছে, কেউ একজন বকুনি খেতই, আমার ওপর দিয়েই গেল, কাজটা তো শেষ পর্যন্ত হয়ে গেল, বল"? এমনকি কয়েক মাস ধরে কোনো মেয়ে তাকে অসাধারণ পারদর্শিতায় প্রেম প্রেম চোখ করে use করছে এবং শেষে "তোমায় তো দাদার মত দেখি" বলে ড্যাং- ড্যাং করে অন্যের হাত ধরে টাটা করতে করতে চলে যাচ্ছে জেনেও যেচে সেইমেয়েটিরই উপকার করতে পারে। এক্ষেত্রে যুক্তিটা হয়ত 'ঠিক আছে আমি তো আমার কাজটা করলাম'। 'হয়ত' বললাম এই জন্য যে এইসব ক্ষেত্রে আমি দাদার সাথে কোনো আলোচনা করিনি, কিছুটা কষ্টে, কিছুটা দাদার নির্বুদ্ধিতায় রেগে গিয়ে। অনেকটা বইতে পড়া ঋষিসুলভ মানুষ। এইসব যদি চোখে না দেখতাম, হয়ত বিশ্বাস করতাম না এরকম মানুষ বইয়ের পাতা ছাড়া বাস্তব জীবনেও আছে।

আমার এই ব্যোম-ভোলানাথ টাইপের সুন্দর দাদাটি আবার মাঝে মাঝে এমন সব স্মরণীয় ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে যে কি বলব। এরকমই কয়েকটা বরং এইবেলা আপনাদের সাথে শেয়ার করে ফেলি।

প্রচন্ড ইম্পর্টান্ট কোনো পরীক্ষা দিতে গিয়ে যখন মনে হয় ঘড়িটা ঘোড়ার মত ছুটছে, হাতে জেট-প্লেনের স্পিড আনার চেষ্টা করছেন সব উত্তর দেবার জন্য, এমন সময় কাউকে ঘুমিয়ে পড়তে শুনেছেন?........আমার দাদা এই মহান কাজটি করার ক্ষমতা রাখেন। নেট পরীক্ষা, যা কিনা আমাদের মতো, 'রিসার্চ করে দেশোদ্ধার করব' গোছের ছিটিয়ালদের ল্যাবে ঢোকার সদর দরজা, সেই মরণ-বাঁচন পরীক্ষাতে উনি বেমালুম কুড়ি মিনিট ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিয়েছিলেন। ভাবতে পারেন? ওঁনার জবানীতেই বলি। "আরে, খুব ভাবনা চিন্তা করতে গেলেই আমার ঘুম পেয়ে যায় জানিস তো? একবার তো নেট পরীক্ষা দিতে গিয়ে প্রথমে যা লেখার লিখে ফেলেছি, যেগুলো পারছি না সেগুলো নিয়ে ভাবতে ভাবতে কখন চোখ লেগে গেছে বুঝতেই পারিনি বুঝলি, হঠাত চটকা ভেঙ্গে দেখি কুড়ি মিনিট পার হয়ে গেছে।"
আমরা যারা শুনছিলাম আঁতকে উঠে বললাম "বল কি?"
"আরে কি করব? আমার বেশি concentrate করতে গেলেই ঘুম পেয়ে যায়"-বলেই সেই ঋষিসুলভ হাসি, কি আর বলা যায় এঁকে বলুন?

এখানে বলে রাখি, দাদাটি আমার ল্যাবতুতো দাদা, যদিও সেই পরিচয়টা আমার কাছে গৌণ, সে আমার নিজেরই দাদা, তাও পরবর্তী ঘটনা গুলি আপনাদেরকে বোঝাতে সুবিধা হবে তাই বলা আর কি। এঁর কাছেই আমার যাবতীয় কাজকর্ম শেখা, যেসব ভাঙিয়ে আমি এখনো অবধি করে খাচ্ছি। ইনিই আমায় আক্ষরিক অর্থেই হাতে ধরে সমস্ত কিছুকে 'অ-এ অজগর আসছে তেড়ে' থেকে শিখিয়েছিলেন। এবং এখনো কিছু সমস্যা হলে আমি নির্দ্বিধায় এঁনাকে সর্বদা জ্বালাতন করে থাকি।

একবার জানুয়ারী মাসের মাঝামাঝি আমাদের দুজনকে মুম্বই যেতে হয়েছিল ল্যাব এরই কোনো একটি অকাজে। হাওড়া থেকে মুম্বই দুরন্ত ছাড়বে সকাল আটটা কুড়ি তে। সকাল থেকে প্রবল বৃষ্টি। দক্ষিন কলকাতা থেকে ট্যাক্সি জোগাড় করে আটটার মধ্যে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছানো সেদিন ছিল একটা চ্যালেঞ্জ। কি করে যে সেদিন পৌঁছেছিলাম সেটি নিয়েই একটা পোস্ট লেখা যায়। যাই হোক, আপাদমস্তক চুপচুপে ভিজে আমরা চারটি প্রাণী কোনোমতে খুবই করুন অবস্থায় তো স্টেশন এ পৌঁছলাম। চারটি প্রাণী বলতে আমার সাথে আমার বাবা, মামা এবং আমার উপগ্রহ পিনাকী। তারা সবাই চলেছে আমার সাথে।আমরা যখন একশ জন লোকের একশ রকম কাজের ফিরিস্তি, যার সাড়ে নিরানব্বই পার্সেন্টও আমাদের কোনো কাজে লাগবে না, তাই শুনতে শুনতে বোর হয়ে-মাথার যন্ত্রণা হয়ে-ক্লান্ত হয়ে প্রায় আধমরা হয়ে পড়ব, ঠিক সেই সময় আমার সঙ্গের তিনজন মজা করে মুম্বই এবং তার আশেপাশে চরকি পাক খাবেন বলে। কি প্যাথেটিক ভাবুন একবার।
সে যাক গে দুঃখের কথা, ক্রমশঃ তো আটটা বাজলো। ট্রেন গুটি গুটি প্লাটফর্মে ঢুকলো। দাদার আমার পাত্তা নেই। বাকিরা চিন্তা করলেও আমার বিশেষ চিন্তা হচ্ছিল না কারণ আমি দাদার প্রোটোকল জানি। উনি সাধারণত ট্রেন ছাড়ার পাঁচ-দশ মিনিট আগে এসে পৌঁছান সব সময়। যদিও ওঁনার এস্টিমেট থাকে আধঘন্টা আগে পৌঁছানোর। তো সে গত এক ঘন্টা আগে শান্ত গলায় ফোনে বলেছে "হ্যাঁ রে আমি বেরিয়েছি। পৌঁছে যাব চিন্তা করিস না। ট্যাক্সি পাচ্ছি না।" ভাবলাম নিশ্চয়ই আটটা পনেরো নাগাদ পৌঁছে যাবে।
ট্রেন এ উঠে আমি আবার ফোন লাগাই। "কি গো কোথায় আছো? ট্রেন তো প্লাটফর্মে ঢুকে গেছে।"
---"আরে আমি মৌলালিতে, ট্যাক্সি পাচ্ছিলাম না। যাও বা অনেক কষ্টে পেলাম রাস্তায় এত জল জমেছে ট্যাক্সি গেল খারাপ হয়ে আমি একটা বাস পেয়েছি, আসছি।"
---আরে কি বলছ??? ট্রেন আটটা কুড়ি তে ছাড়বে!!!!! কি করে পৌছাবে তুমি?? আমি আর্তনাদ করে উঠি।
আমার নিরুত্তাপ দাদাটি বলেন "দাঁড়া না, সকাল বেলা রাস্তা ফাঁকা, ঠিক পনের মিনিটে হাওড়া পৌছে যাব। চিন্তা করিস না।"

বুঝতেই পারছেন পরিস্থিতি, আমরা ট্রেন এ উঠে ব্যাগ-ব্যাগেজ ঠিকঠাক করিনি পর্যন্ত। টেনশনের চোটে পিনাকী বাইরে পায়চারী করছে, আর আমি প্রতি দুই মিনিট অন্তর ফোন করছি "কোথায় আছো-কোথায় আছো" করে। সঙ্গে আবার আমার বাবা। যাঁর স্বভাব অন্তত দুটি ঘন্টা আগে স্টেশনে পৌঁছানো। যাঁরা আমার বাবার কথা পড়েছেন তাঁরা জানেন আমার বাবার পক্ষে এই ঘটনাটি চোখের সামনে বসে দেখা কতটা অবিশ্বাস্যরকমের কষ্টকর। তিনি তো প্রতি দশ সেকেন্ড অন্তর একবার করে মাথা নাড়ছেন, আর বিড়বিড় করছেন "কেন যে এরা একটু তাড়াতাড়ি বেরোয়না"?  "উফ কি যে করে?" "একটু আগে পৌঁছে বসে থাকতে যে কি হয়?"........ইত্যাদি ইত্যাদি। আমাদের সাথে সাথে আশেপাশের অন্যান্য সহযাত্রীরাও ব্যাগ-ফ্যাগ গুছিয়ে সুস্থ হয়ে বসে ব্যাপারটা শুনে ক্রমশঃ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তে থাকেন।

আটটা পনের।
আবার ফোন করি "কোথায় তুমি?"
---"আমি হাওড়া ব্রিজে। বাসটা খুব আসতে চলছিল বলে নেমে আবার একটা ট্যাক্সি নিয়েছি।"
---"ভগবান! ভালই হয়েছে তুমি সোজা নিউ কমপ্লেক্স এর দিকে চলে এস। এত নম্বর প্লাটফর্মে আছে ট্রেন। জলদি। "

 আটটা কুড়ি। ট্রেন হুইসিল দিল।
---"ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছে, কোথায় তুমি?"
---"আমি ঢুকেছি স্টেশনে, দৌড়াচ্ছি রে। মনে হচ্ছে আর হবে না বুঝলি, তোর কাছেই তো আমার পোস্টারটা আছে, তুই আমার পেপারটা প্রেসেন্ট করে দিস। " দৌড়াতে দৌড়াতে একশ ভাগ নিরুত্তাপ-শান্ত গলায় দাদা বলতে থাকে।
আমি জানিনা এই রকম পরিস্থিতিকে কারো পক্ষে কি করে এত শান্ত থাকা সম্ভব? কি করে ওই মুহুর্তে পোস্টার প্রেসেন্টেশনের কথা মাথায় আসা সম্ভব? একটা অক্ষর বানিয়ে বলছি না বিশ্বাস করুন।

আমি দরজার বাইরে প্রায় ঝুলে ফোন কানে নিয়ে চিত্কার করি...." আরে ছাড় তোমার পোস্টার-পেপার। ট্রেন চলতে শুরু করেছে তুমি দৌড়াও, তোমায় দেখতে পাচ্ছি না কেন? তুমি কি প্লাটফর্মে এসে পৌঁছাঁওনি এখনো?"

প্লাটফর্মের কুলিরা, মামা এবং অন্যান্য সহযাত্রীরা আমায় আশ্বাস দেন যে আর চিন্তা করার কারণ নেই, ট্রেনটা দাদার নিশ্চিত ভবেই মিস হয়েছে। বাবা ততক্ষণে চুপ। আমিও দীর্ঘশ্বাস ফেলে সিটে এসে বসি। আমার সাথে সাথে অন্য পাসেঞ্জার-রাও দীর্ঘশ্বাস ফেলে শান্ত হয়ে বসেন। সবাই-ই এতক্ষণ উত্কন্ঠায় ছিলেন।
এমন সময় আমাদের ফের উত্কন্ঠিত করে ট্রেন প্লাটফর্মের শেষ প্রান্তে এসে হঠাতই ধীরে ধীরে থেমে যায়। সকলেই শিরদাঁড়া সোজা করে বসেন। আমিও ফের ফোন করি "ট্রেন থেমেছে.... তুমি আর একটু দৌড়াও... পেয়ে যাবে।"
উত্তর আসে সেই ধীর গলায় "হ্যাঁ রে দৌড়াচ্ছি, ট্রেন এর মাথাটা দেখতে পাচ্ছি।"
আমি ফোন রেখে দি। আমার দাদাটি এইরকম ক্রিটিকাল মুহূর্তেও ফোন ধরবেই, ফলে দৌড়ানোর স্পিড কমতে বাধ্য। ঠিক আছে ট্রেন আবার স্পিড নিলে আমি ফোন করব। তখন তো ফয়সালা যা হবার হয়ে যাবে।
ট্রেন চলতে শুরু করল.....দম বন্ধ করে বসে আছি সবাই...থ্রিলার মুভির ক্লাইম্যাক্স চলছে যেন....ট্রেন প্লাটফর্ম ছেড়ে বেরিয়ে কিছুটা গেলেই ফোন করব।

আমায় আর করতে হলো না দু মিনিট পরে দাদারই ফোন।
"উঠেছি রে। গার্ড এর কামরায়, গার্ডকে হাত দেখিয়েছিলাম, আমায় অনেক দূর থেকে দৌড়াতে দেখে গার্ড থামিয়েছে ট্রেনটা। দাঁড়া আসছি তোদের কাছে।"
হাতের ব্যাগটা গার্ডকে ছুঁড়ে দিয়ে অন্য ব্যাগটা  কোনোক্রমে টেনে তুলে হাঁচড়- পাঁচড় করতে করতে দাদাটি আমার সে যাত্রা মুম্বই দুরন্তর আপামর যাত্রীকে ঝাড়া দু-দুটি মিনিট এক্সট্রা লেট করিয়ে শেষ পর্যন্ত ট্রেন এ উঠেছিলেন।

যুদ্ধজয়ের পর আমাদের কাছে আসার সময় আমি তো বটেই আমার সাথে অন্য সব যাত্রীরাই আনন্দে হাততালি দিয়ে উঠলেন। কারণ সকলেই তো গত কুড়ি-পঁচিশ মিনিট ধরে আমাদের সাথে সাথে শ্বাস বন্ধ করে ছিলেন, তাই ওটা ছিল টেনশন রিলিজের স্বতস্ফুর্ত বহিঃপ্রকাশ।

আর দাদাটি? সে স্বভাবসুলভ হাসি হাসি মুখে সকলের সাথে হাত মিলিয়ে বিশাল বপুটি নিয়ে বসে হ্যা- হ্যা করে হাঁপাতে লাগলো। আর মৃদু মৃদু হাসতে লাগলো। আর তার পাশে বসে আমার বাবা তো তাকে অবিশ্রান্ত উপদেশ-নির্দেশ, দেরী করে বেরোনোর কুফল ও তাড়াতাড়ি বেরোনোর সুফল সম্পর্কে বেশ বড়সড় একটি প্রবন্ধ মুখে মুখে শোনাতে লাগলেন। সহযাত্রীরাও তাতে বেশ মাথা টাথা নাড়তে লাগলেন।

শেষে একসময় তাঁর উপর গণ-উপদেশের বন্যা শেষ হলো, সমস্ত সহযাত্রীরা যে যার নিজের বাড়িতে ফোন করে ট্রেন ঠিকঠাক ভাবে চলতে শুরু করেছে এবং তাঁরাও ঠিকঠাক ভাবে তাতে চেপে বসতে পেরেছেন এই খবর দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। কারণ এতক্ষণ সবাই এই অত্যাবশ্যক কর্মটিকে ভুলে মেরে দিয়েছিলেন এই মৌলিক adventure মুভিটি বিনা পয়সায় দেখতে গিয়ে। এই সময় আমি ভাবলাম আমিই বা জ্ঞান দেবার এই সুবর্ণ সুযোগ ছাড়ি কেন? প্রচন্ড গম্ভীর হয়ে বললাম, "তুমি তো দেখলে এত বৃষ্টি হচ্ছে সকাল থেকে, তুমি একটু তাড়াতাড়ি বেরোবে তো? কি হত বল তো?" শান্ত নির্লিপ্ত গলায় একগাল হেসে বলল "কি আর হতো? বাড়ি ফিরে যেতাম, তুই আমার পোস্টার প্রেসেন্ট করে দিতিস?"
খানিকক্ষণ হাঁ করে মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে শেষে ভাবলাম-"সত্যই তো, কি ই বা হতো? এমন কি খুব ক্ষতি হত? আমরা বড্ড বেশি চিন্তা করি জীবন নিয়ে, জীবন বড় সহজ- সরল, তাকে সহজ করে নিলেই হয়।"
দাদাটি আমার বড় ভালো গান করেন, সেযাত্রা তাঁর নতুন অ্যালবামের গান ও অন্য অনেক সুন্দর সুন্দর গানে আমাদের জার্নিটি অত্যন্ত উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল।

আমার এই দাদাটিকে নিয়ে এরকম অনেক মজাদার ঘটনা আছে, যা নিয়ে আমরা সবাই হয়ত হাসাহাসি করি বা করেছি অনেক সময়, কিন্তু দিনের শেষে একা ভাবতে বসলে ওই কথাটাই মনে হয় "সত্যিই তো কি ই বা হত?" শান্ত- সহজ-অত্যন্ত বিনয়ী-নিজের কাজের প্রতি দুশ ভাগ সত এই মানুষটির প্রতি অনেকসময় রাগও হয়েছে জানেন। কেন সে অন্যের কাছ থেকে ঠকছে জেনেও প্রতিবাদ করবে না? কেন তার নিজের সহজাত বিনয়কে অন্য লোকে দুর্বলতা ভেবে তাকে ব্যবহার করছে জেনেও তার উপকার করবে?......ইত্যাদি ইত্যাদি। আজ মনে হয়, আমার সৌভাগ্য যে, এরকম একটা মানুষের সাথে একসময় দিন দুবেলা কাজ করেছি। তাই তো এই গুণগুলোকে কেবলমাত্র ছোটবেলায় বইতে পড়া কেতাবি কথা বলে ভুল না করে নিজের জীবনেও অন্তত কিছুটা প্রয়োগ করার উদাহরণ চোখের সামনে দেখতে পেলাম। ভেবে বড় শান্ত লাগে নিজেকে।

যাক গে, আজ এপর্যন্তই থাক। সদাহাস্যময়-নিরুদ্বিগ্ন ধীর-শান্ত এই মানুষটির আরো অনেক মজার কাহিনী আমি আপনাদের শোনাব ভবিষ্যতে খুব তাড়াতাড়িই। আপাতত এই পোস্টটির জন্য এখানেই থামছি। ভালো থাকবেন সক্কলে।    

2 comments:

  1. Ha ha ha.... Boroi mojar chilo se sab din.... Miss you all.... Missing those moments here all the time in Hyderabad.... Blog er lekha ta khub sundar hoyeche.... Purano memory fresh holo... Bhultei bosechilam sob.... But somosto reader der ami etai bolte chai, je amar ei bon ti ba student ti (Arpita'r bhasay) kintu khub e pprotibhaban.... Ebong o sotti e nijer kaaj nijei korechilo during PhD nijer plan ei.... Ami bisesh kichui help korte parini oke ba tar darkar o poreni.... Ulte nana bishoy e Arpita aar Pinaki r kaach theke na na bishoye anek sohojogita ami peyechi.... Oder ke ami amar khub kacher manush hosebei bhabi.... Bhalo thakis bhalo kaaj koris amar ei subho kamonaai thakbe sab samay....:-)

    ReplyDelete
    Replies
    1. উফফ!! প্রশংসা!প্রশংসা! কি ভালো ব্যাপার, কতদিন পর কেউ প্রশংসা করলো। মনটা খুশি হয়ে গেল গো। তোমার memory আরো রিফ্রেশ করার মত কিছু ঘটনা আমার লিখে ফেলার ইচ্ছা আছে। সবুর কর একটু। বুঝবে মজা। হা হা...........

      Delete