Friday 23 January 2015

আমার জীবনে প্রথম ভ্রমণের স্মৃতি

ভারতবর্ষের বেশ কয়েকটি প্রদেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় পা রাখার সুযোগ হয়েছে। নানা জায়গার নানা ভাল মন্দ স্মৃতি। কিন্তু জীবনে প্রথমবার বেড়াতে যাবার স্মৃতি নিশ্চয় বাকি সব বেড়ানোর থেকে একটু হলেও বেশি গুরুত্ব পাবে। তাইনা? আমার জীবনের প্রথম বেড়াতে যাবার স্মৃতি বলতে দীঘার কথাই মনে পড়ে। মনে আছে ২৫শে ডিসেম্বর বাবা-মা-ছোটপিসিমা-পিসেমশাই-দুই পিসতুতো আর দুই মাসতুতো দিদির বড়সড় গ্রুপ নিয়ে যখন গিয়ে পৌঁছেছিলাম মানে বাবা-মায়ের ল্যাংবোট হয়ে আর কি? তখন দীঘায় থিক থিক করছে লোক। সকলেই আমাদের মতন মা-মাসি-পিসি-রাঙ্গা কাকার ছোট শালীর মেজভাসুরের জামাইএর পিসতুতো ভাইএর ছেলেকে নিয়ে ২৫শে ডিসেম্বরের ছুটিতে সমুদ্রের বালি মাখতে ঊর্ধ্বশ্বাসে দীঘা গিয়ে হাজির হয়েছে। কিন্তু দীঘাতে থাকার জায়গা তো আর পাল্লা দিয়ে বাড়েনি। ফলতঃ যা হবার তা হল। একসেট লোক নিজেদের জামাকাপড়-কাঁসি-চামচ-ছুরি-কাঁচি-মুড়ির প্যাকেট-বাচ্চার কাঁথা-ছেঁড়া গামছা ইত্যাদি ইত্যাদি সম্পত্তি ঠিক করে সামলে সুমলে প্যাক করে হোটেলের ঘর ছেড়ে বেরোতে না বেরোতেই আর একসেট লোক হুড়মুড় করে সে ঘরের দখল নিতে নিজেদের জামাকাপড়-কাঁসি-চামচ-ছুরি-কাঁচি-মুড়ির প্যাকেট-বাচ্চার কাঁথা-ছেঁড়া গামছা ইত্যাদি ইত্যাদি সম্পত্তি নিয়ে ঘরের পুরনো মালিকদের ঘাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে পড়ছিল। আমার তখন হামলা করা বা হামলা সামলানো কোনটাই করার বয়স হয়নি তো তাই শুধু এটুকু মনে আছে- মাস্টারমশাই বলে কোন একজনের ছোট্ট একটা বাড়ির বাইরের সিঁড়িতে নিমপাতা খাওয়া মুখ করে বসে বসে মশার কামড় খাচ্ছিলাম। সে বাড়ির কোন একটা ঘর খালি হলেই আমরা সে ঘরের দখল নেব। মাস্টারমশাই এর সাথে তেমনই কথা হয়েছে বাবার। এই হল আমার জীবনের প্রথম ভ্রমণের স্মৃতি। ওহ, আরও একটা স্মৃতি আছে। সেটা হল মা একটা কালো-কমলা কম্বিনেশনে সোয়েটার তৈরি করেছিল আমার জন্য। বকুলফুল ডিজাইন। সেসব নাকি প্রচন্ড কঠিন ডিজাইন। তো সেই মায়ের সাধের ধুসকো মোটা আর প্রচন্ড টাইট সোয়েটারটিকে দীঘার মত সমুদ্র তীরবর্তী জায়গায় চড়চড়ে দুপুরের রোদে আমায় পরে বসে বসে ঘামতে হচ্ছিল।  কারণ ২৫শে ডিসেম্বর থিওরি অনুসারে নাকি প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। সুতরাং হাতের কাছে এমন নির্বিবাদী একটি ট্যাঁ থাকতে থিওরির প্রোটোকল মানাতে আর কাকে লাগে? আর তাতেই আমার মুখটা ক্রমশঃ নিমপাতা খেয়ে ফেলার মতন হয়ে যাচ্ছিলো। পরে যখন সেইবার দীঘা যাবার ছবিগুলো দেখি প্রত্যেকটাতেই আমার মুখটা ওরকম রবিবার সকালে কালমেঘের রস গিলে বসে আছি বলে মনে হচ্ছে। সব ওই কুটকুটে-মোটা-টাইট সোয়েটারের দোষ। ছবিতে সোমাদিদি একগাল হেসে আমায় জড়িয়ে ধরে বসে আছে-আমি গম্ভীর হয়ে ভুরু কুঁচকে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছি, মা বাবার হাসিমুখের মাঝে আমি স্যান্ডউইচ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি-মুখে একরাশ বিরক্তি, এমনকি ঘোড়ার পিঠে চেপেও চোখে আনন্দ বা পড়ে যাবার ভয় নয় ভুরু কুঁচকে বিরক্তমুখে তাকিয়ে আছি। সেসব ছবির একটিও আপাতত আমার কাছে নেই নইলে অবশ্যই আমি আপনাদের দেখাতাম।
                             
দীঘার সমুদ্র-বালি-ঝাউগাছ-সমুদ্রের ধারের লোভনীয় দোকানপাট কোনকিছু এতদিন পরে আমার মনে ঠাঁই পাইনি। সবকিছুকে ছাপিয়ে যেটা আছে তা হল মায়ের অনেক কষ্টে সাধ করে বুনে দেওয়া ওই কালো-কমলা-বকুলফুল মার্কা-মোটা-টাইট-কুটকুটে সোয়েটার পরে গরম আর কুটকুটুনির স্মৃতি।

এই আমার জীবনে প্রথম ভ্রমণের স্মৃতি। আপনি জীবনে প্রথমবার বেড়াতে কোথায় গেছিলেন?                              

Tuesday 20 January 2015

অ্যাচিভমেন্ট

আচ্ছা “এখন নয়, বড় হও তারপর করবে” এই কথাটা বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কে কে শোনেননি? আমার তো মনে হয় এমন একজনকেও পাওয়া যাবে না যিনি এই কথাটি ছোটবেলায় একবারও শোনেননি।
বিয়ে বাড়িতে বড় দিদিরা শাড়ি টাড়ি পরে সাজুগুজু করে ঠোঁটে লিপস্টিক লাগাচ্ছে। আর আমি সাদা রঙের ফ্রক আর পায়ে কেডস টাইপের জুতো পরে ন্যাড়া মাথায় সেই দিকে হাঁ আ আ করে তাকিয়ে আছি দেখে দিদিদের মধ্যেই কেউ অমোঘ ভবিষ্যৎ বাণী করল “তাকাস না। তোর এখনও অনেক দেরি।”
তারপর ধরুন মা-জ্যেঠিমায়েরা বাৎসরিক পারিবারিক জটলায় গুজগুজ করছে। আমি দাঁত বের করে সেখানে গিয়ে দাঁড়াতেই মা দুই তিন সেকেন্ড স্থির চোখে তাকাল আর আমার মনে পড়ে গেল যে এখানে তো বড়রা কথা বলছে আমার প্রবেশ নিষেধ। পত্রপাঠ আমি দাঁত বন্ধ করে গুটি-গুটি পায়ে ফের নিজের রাজ্যে ফিরে এলাম। ছোট ছোট মানুষদের এইসব বড় বড় দুঃখের কথা প্রায় সকলেরই জানা। তাইনা? তখন খালি মনে হত দাঁড়াও না একবার বড় হয়ে যাই। তারপর দেখবে।

ক্লাস ফাইভে ওঠার পরে যখন বাবা বাজারে মান্না সেলুনে নিয়ে গিয়ে মাথাটা ন্যাড়া করিয়ে আনল খুব গরম পড়েছে বলে, আমার তখন বিশেষ দুঃখ টুঃখ হয়নি মনে বিশ্বাস করুন। কারণ আমার ন্যাড়া হবার ফ্রিকোয়েন্সি এত বেশি ছিল যে চুল না থাকার দুঃখ তো দূর অস্ত, প্রথমেই মনে হল “যাক বাবা, গরম পড়েছে, এবার স্নানের সময় বাদ দিয়েও বিকেলবেলা দৌড় ঝাঁপের পর “গা ধুতে যাচ্ছি” বলে পুকুরে ঘণ্টাখানেক কাটিয়ে এলেও মাথা দেখে মা কিছু বুঝতে পারবে না। পুকুরের জল ঘুলিয়ে না ওঠা পর্যন্ত  ডুব-সাঁতার, চিত-সাঁতার, আরও এক্স-ওয়াই-জেড নানারকম সাঁতার নিশ্চিন্তে চালিয়ে যাওয়া যাবে। পুকুর থেকে উঠে মাথায় একবার গামছা বুলিয়ে নিলেই হল। চুলই তো নেই। মাথা ভিজে বলে মা বকবে কি করে? অতএব ফুরফুরে মনেই পরদিন স্কুলে চলে গেলাম। গিয়েই মনে হল ফুরফুরে তো আর থাকা যাচ্ছে না। কি হল? বন্ধুরা সব বলছে তুই এখনও ন্যাড়া হস? বলে খিক খিক করে হাসছে। বন্ধুদের দুজনের দিব্বি কোঁকড়া কোঁকড়া ম্যাগি টাইপ এর চুল। তাতে ছোট্ট মিকি মাউস ক্লিপ। একজন মোটা চুল এর যত্নে বেশ করে শালিমার নারকেল তেল জাবড়ে এসেছে। রগ দিয়ে প্রায় তেল গড়াচ্ছে এমন অবস্থা। আর দুজন তো রীতিমতো কাঁটালি কলা সাইজের বেণীধারিণী। আমি হংস মধ্যে বক যথা হয়ে ক্যাবলা মুখে দাঁড়িয়ে আছি। টিফিনব্রেক এ খেলার সময় আরও একচোট খিক খিক। বড় ক্লাস এর দিদিরা কেউ কেউ “কিরে আবার ন্যাড়া?” –বলে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে। শেষে যখন লাস্ট পিরিয়ডে সরকার দিদিমনিও বললেন যে, “আবার ন্যাড়া হলি? এবার একটু রাখ চুল”-তখন কি জানি কেন প্রথম বার মনে হল ন্যাড়া না হলেই ভাল হত। মনে হল আর বুঝি ন্যাড়া হওয়া যায় না, আমি বড় হয়ে গেছি। হয়ত সেটাই সজ্ঞানে বালিকা থেকে কৈশোরে পদার্পণে আমার প্রথম সৌন্দর্য সচেতনতা। বাড়িতে এসে মাকে বলেছিলাম মনে আছে যে আমি আর ন্যাড়া হব না। স্কুলে সকলে হাসে। আর আমায় অবাক করে দিয়ে মাও আমার কথায় সেদিন সায় দিয়েছিল মনে আছে। বোধহয় সেদিন থেকেই শুরু হয়েছিল আমার বড় হওয়া। তারপর আস্তে আস্তে ফ্রক বা স্কার্ট এর সাথে বন্ধুরা বেল্ট দেওয়া কিশোরীসুলভ জুতো পরছে দেখে কোন একদিন আমার কেডস এর প্রতি অনীহা, এক মন অনিচ্ছা নিয়ে কেডস পরে বিয়ে বাড়ি যাওয়া, তারপর ক্লাস সেভেন-এ প্রথম বার পায়ে মেয়েদের জুতো পাওয়া-এভাবেই আস্তে আস্তে আমি-আমরা সবাই বালিকা থেকে ধীরে ধীরে কিশোরী হয়ে পড়ি। প্রায় সকলেরই এবিষয়ে কমবেশি অভিজ্ঞতা একই।

কিন্তু যে বিষয়ে অভিজ্ঞতাটা মেলে না সেটা হল, এই বড় হয়ে ওঠার দিনগুলোতে একএকটা ঘটনা মাইলস্টোনের মতন হয়ে পড়ে । এই মাইলস্টোনগুলো আমি আপনি প্রত্যেকের জন্যে আলাদা আলাদা। মনে হয় এই মাইলস্টোনগুলো ছুঁতে পারলেই বুঝি বড় হতে পারা যায়। বড় হতে থাকার সাথে সাথে এই লক্ষ্যগুলোও যায় বদলে। একেকটা মাইলস্টোন ছুঁতে পারার অ্যাচিভমেন্ট স্থির করে দেয় পরের মাইলস্টোন। আমার ছোট্টবেলার সেইসব কয়েকটা মাইলস্টোন এর গল্প শোনাতে বসেছি আজ। যেগুলো ছিল ভাগ্যিস। তাই তো এত বড় (বুড়ো) হলাম। নতুন নতুন মাইলস্টোন সেট করতে পেলাম।

খুব ছোটবেলায় এখনকার এই পাঁচফুটিয়া চেহারাটা লম্বায় কতটা মাক্সিমাম হতে পারে বুঝতেই পারছেন। এবং কুঁজোর যেহেতু সবসময়ই চিত হয়ে শুতে সাধ হয়, সেহেতুই বোধহয় নিজের জন্যে সেট করা আমার প্রথম মাইলস্টোন ছিল, “কবে আমি শোবার ঘরের শিকলটা খুলতে লাগাতে পারব?” তার আগে রান্না ঘরের শিকল নীচে থেকে ঠেলা মেরে খুলতে শিখে গেছি। ওটা ছিল শোবার ঘরেরটার চেয়ে নিচু। আমার যথেষ্ট লম্বা (বড়) হবার প্রমাণ হিসেবে এটা ছিল একটা গুরুত্বপূর্ণ মাইলস্টোন।    

পরেরটা ছিল আর একটা হাস্যকর ইচ্ছে। রোজ মনে মনে ঠাকুর প্রণাম করার সময় মায়ের শিখিয়ে দেওয়া বুলি “ঠাকুর সকলকে ভাল রেখ” বলার সাথে সাথে এটাও নিজে থেকে যোগ করে দিতাম যে, “ঠাকুর টুসিদিদির মতন আমিও যেন থ্রী তে পড়ি।” পাশের বাড়ির টুসিদিদির ক্লাস থ্রী তে পড়াটাই তখন আমার উচ্চশিক্ষার মার্কামারা প্রমাণ ছিল কারন আমার তখনও স্কুল বস্তুটির সাথে পরিচয় হয়নি।

তারপর ক্রমে ক্রমে সময়ের নিয়মেই আমি যখন ক্লাস থ্রী তে উঠলাম, ক্লাস থ্রী র ক্লাস রুম এর জানালা দিয়ে পাশের গার্লস স্কুলের মাঠে নীল স্কার্ট-সাদা শার্ট-সাদা কেডস পরে পিটি ক্লাস করতে আসা মেয়েদের দিকে তাকিয়ে চুপি চুপি প্রার্থনা করতাম, “উফফ, কবে ওরকম স্কুল ড্রেস পরে মাঠে পিটি করব?” সরকারী প্রাইমারী স্কুলে পড়া আমার কোন নির্দিষ্ট স্কুল ড্রেস ছিল না। মনে আছে ক্লাস ফাইভে ওঠার পর নতুন তৈরি হয়ে আসা নীল স্কার্ট-সাদা শার্টটাকে পুজোয় পাওয়া নতুন জামার থেকেও বেশি যত্নে রাখতাম বেশ কয়েকদিন।

আস্তে আস্তে শরীরে-মনে বড় হতে হতে মাইলস্টোনগুলোও বদলাতে থাকল। তার কিছু কিছু ছুঁতে পারা গেল কিছু কিছু রয়ে গেল অধরাই। বড় হবার সাথে সাথে চাহিদাগুলো তো সেরকম সোজা সাপটা থাকে না। আর বড়বেলার অধরা লক্ষ্যের কথা বুক বাজিয়ে বলার মতন শক্তপোক্ত বুকের পাটা যে আমার কস্মিন কালেও নেই সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অতএব সে কথা নাহয় উহ্যই থাকুক।    

এরপর বাকি থাকে যা, তা আর এক- দুই-তিন করে সাজিয়ে দেবার মতন না। যেগুলো ছিল সেগুলোকে ঠিক অ্যাচিভমেন্ট বলা যায় না। জীবনের নিয়মেই ঘটতে থাকা কতগুলি ঘটনা। যেমন মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক-কলেজ-ইউনিভার্সিটি-ল্যাব-পেপার সবক্ষেত্রেই “হে ভগবান, পার করে দাও” বলে  ভগবানকে মেন্টাল টর্চার করে করে পার হয়ে আসার ইতিহাস। সেসব আর বলার মতন কিছু নয়। সকলেই কম বেশি এসবের মধ্যে দিয়ে এসেছেন। তবে একটা জিনিস সব ক্ষেত্রেই কমন, যে দরজার শিকলে হাত পৌঁছে গেলে আর সেই মাইলস্টোনটির কোন মূল্য থাকেনা ঠিকই, কিন্তু একথাও অনস্বীকার্য যে শিকল অবধি পৌঁছাতে চাওয়ার ঐকান্তিক বাসনাতেই হয়ত লম্বা হবার পদ্ধতিতে কোন ফাঁক পড়েনা। আর তাতেই তাড়াতাড়ি লম্বা হওয়াটা হয়ে যায়।

ভাবতে অবাক লাগে যে, “ঠাকুর টুসিদিদির মতন আমিও যেন থ্রী তে পড়ি”- এই প্রার্থনাটা বত্রিশ বছরের মরচে পড়া জীবনে কত অকিঞ্চিৎকর এখন। অথচ এই একটি বাক্য আমি প্রতিদিন-দুবেলা পরম ভক্তিভরে জপ করেছি পরপর কতগুলি বছর। চার বছরের আমির দিকে তাকিয়ে ঠোঁট বেঁকিয়ে হাসছে বত্রিশ বছরের যে আমি, আমি নিশ্চিত, সেই আমির দিকে তাকিয়ে বাহাত্তর বছরের আমিও সেই একই রকমভাবে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসবে। এই আমি লিখে দিলাম। বড় হবার প্রসেস এ আছি। আস্তে আস্তে আরও যখন বড় হব আজকে সেট করা বেশিরভাগ মাইলস্টোনগুলোর (অবশ্যই সেগুলো আমি এখন বলবনা, পাগল নাকি!) দিকে ফিরেও তাকাতে ইচ্ছে হবে না এ আমি হলফ করে বলতে পারি।


আপনাদেরও নিশ্চয়ই এরকম সব ভারি ভারি লক্ষ্য ছিল ছোটবেলায়? জানি তো থাকতেই হবে। সক্কলের থাকে। আমারগুলো তো জানিয়ে দিলাম। আপনাদের গুলো?

Thursday 8 January 2015

অভাবের অভাব না স্বভাবের অভাব

আচ্ছা টাকাপয়সা সম্বন্ধে আপনাদের কি ধারণা? খুব একটা স্পষ্ট ধারণা না থাকলেও এটুকু না মানলেই নয় যে জীবনধারণের জন্য এই বস্তুটির মত প্রয়োজনীয় আর কিছুই নেই, আবার জীবনযাত্রার শান্তি বিঘ্নিত করার জন্য এর চেয়ে দক্ষ বস্তুও আর কিছুই নেই। তাই দরকারের বেশি এসব নিয়ে নাড়াঘাঁটা না করাই ভাল। তাই যদিও আমি মনে করি টাকাপয়সা সংক্রান্ত কথাবার্তা যত কম বলা যায় ততই ভাল, তাও টাকাপয়সার অভাবে গরিব মানুষদের কত কষ্ট হয় তার অন্তত দুটি বিবরণ আপনাদের সামনে পেশ করার লোভ আমি সামলাতে পারছি না। ঘটনাগুলি শুনে আপনারাই বিচার করুন এইসব এইসব দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর লোকজনের অভাব দূরীকরণের জন্যে কি করা যায়?

ঘটনা ১

স্থানঃ গুরগাঁও এর ব্যস্ত রাজপথ।

কালঃ সেপ্টেম্বর- অক্টোবর এর কোন একদিন সকাল ১০ টা।

পাত্রপাত্রী ও ঘটনাঃ আমরা দুজন বিনোদ (নাকি ভিনোদ...উফ চিরকালের সমস্যা আমার এই নাম উচ্চারণ) ভাই এর অটো চেপে গুরগাঁও থেকে আমাদের দ্বীপরাষ্ট্রে ফিরে আসছি। দেরী হয়েছে যথেষ্ট। বিনোদভাই যথাসম্ভব তাড়াহুড়ো করে এদিক ওদিক ট্র্যাফিক কাটিয়ে প্যাঁকাল মাছের মতন এগিয়ে চলার চেষ্টা করছে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। সাইডের রাস্তা থেকে ফ্লাইওভার এ ওঠার মুখে বিনোদের রথ গেল থেমে। আর শুধু থেমেই গেল না ওই বিখ্যাত জ্যামে ন যযৌ ন তস্থৌ হয়ে অনন্ত কালের জন্য রাস্তায় গেঁথে গেল। লক্ষ-লক্ষ অটো থেকে শুরু করে মহার্ঘ্য সব গাড়ি প্যাঁ-পোঁ করে নিজের নিজের তাড়াহুড়োর এত্তালা দিতে লাগলো। আর আমরা কিছুক্ষণ দেরী হচ্ছে বলে প্রচণ্ড টেনশন করে শেষে হাল ছেড়ে দিয়ে যে যার মতন রামপ্রসাদীতে ফিরে গেলাম। তখনই ঘটলো প্রথম ঘটনা। আমাদের সময়মত পৌঁছে দেবার জন্য বিনোদভাই এর আন্তরিক চেষ্টার অন্ত ছিল না। সে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো প্রায় সত্তর আশি বছরের (মানে তাঁকে দেখে এরকম বয়সীই মনে হচ্ছিল) ট্র্যাফিক পুলিশ মহোদয়কে অনুরোধ করল যে সামনের আর ডানদিকের দুটি গাড়িকে যদি তিনি দয়া করে একটু তাঁর হুইশল এর জোরে এদিক-ওদিক সরিয়ে নড়িয়ে দেন তবে বিনোদ ফ্লাইওভারে না উঠে তার অটোটিকে ব্যাক করিয়ে বামদিকের অন্য রাস্তায় নিয়ে গিয়ে ফেলতে পারে এবং সে রাস্তা দিয়ে আমাদের সময়মত পৌঁছে দেবার একটা শেষ চেষ্টা করে দেখতে পারে। এটি কোনও বেআইনি অনুরোধ নয়। অনায়াসেই তিনি সেটি করতে পারতেন। উত্তরে পুলিশদাদু ডান হাতটি বরাভয় মুদ্রায় তুললেন একবার। আমি ভাবলাম বলছেন হয়ত “তিষ্ঠ বৎস ক্ষণকাল, তোমার আবেদন এই আমি মঞ্জুর করলুম বলে।” ফোঁস করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়তে যাব, দেখি অভিজ্ঞ বিনোদ বলছে “ক্যা তাউ জি? ইসকে লিয়ে ভি ফিফটি? ছোড়িয়ে।” স্বস্তির নিঃশ্বাসটা ক্যোঁৎ করে গিলে ফেলে বুঝতে পারলাম যে পুলিশদাদুর ওই পাঁচ আঙ্গুল-এর মানে বরাভয় না, বরং পঞ্চাশটি টাকা। দুটি গাড়িকে সরিয়ে আমাদের ভিড় থেকে পিছু হেঁটে বেরিয়ে যাবার দাম হিসাবে গরিব পুলিশদাদু পঞ্চাশ টাকা হেঁকে বসেছিলেন।

সেদিন আমরা ওই জ্যামে প্রায় পনের-কুড়ি মিনিট আটকে ছিলাম।        

        
ঘটনা ২

স্থানঃ গুরগাঁও থেকে বেরিয়ে এসে হরিয়ানার গ্রামের পাশে জাতীয়সড়ক।

কালঃ ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের কোন এক ভোর, হাড়হিম করা ঠাণ্ডা হাওয়া। 

পাত্রপাত্রী ও ঘটনাঃ সেদিন দিল্লিতে তাপমাত্রা নাকি ২.৬ ডিগ্রি। আমাদের এই ফাঁকা জাতীয়সড়কের ধারে তাপমাত্রা হয়ত আরও এক দেড় ডিগ্রি কম হবে। নিজেকে আপাদমস্তক আচ্ছা করে সোয়েটার-জ্যাকেট-টুপি-মোজা-মাফলারে মুড়ে চোখ দুটো শুধু বের করে হাত পকেটে ঢুকিয়ে আমাদের গাড়ির জন্যে অপেক্ষা করছি আর রাস্তার ধারে তেড়ে পায়চারি করছি মানে গা গরম করার ব্যর্থ চেষ্টা চালাচ্ছি। পিনাকী ওরই মধ্যে ক্যামেরা বার করে আকাশ-বাতাস-কুয়াশা-কুয়াশার মাঝে গাড়ি-রাস্তার পাশে আগুন জ্বালিয়ে লোকজনের জটলা এসবের দিকে তাক করছে। মানে ও ওর মতন করে গা গরম করার চেষ্টা করছে (আমি নিশ্চিত ওই ঠাণ্ডায় শৈল্পিক ছবি তোলার দিকে মন থাকার কথা নয়)। সে যাক গিয়ে। ওই যে বললাম না রাস্তার পাশে আগুন জ্বালিয়ে লোকজনের জটলা-এঁরা সকলেই স্থানীয় দোকানদার-ফলওয়ালা-চিনেবাদামওয়ালা ইত্যাদি ইত্যাদি। দোকান খোলার আগে প্রাত্যহিক গল্পগাছা আর আগুন পোহানো চলছে। সেদিকে তাক করতেই সেখান থেকে একজন হঠাৎ ডান হাতটা সটান মাথায় ঠেকিয়ে পিনাকীর দিকে স্যালুট ঠুকে দিল। থতমত খেয়ে পিনাকীও হেসে ডানহাতটা মাথায় ঠেকাল। ততক্ষণে জটলার জনগণ আমাদের বোধহয় প্রচণ্ড ধনী বিদেশি ট্যুরিস্ট ঠাউরে ফেলেছে। যাঁরা ভারতবর্ষের কোনোকিছুই ছবি তোলার অযোগ্য বলে মনে করেন না। তাই শীত-বর্ষা-ভুমিকম্প-বজ্রপাত-জলোচ্ছ্বাস কোনোকিছুই তাঁদের ফটোগ্রাফি থেকে বিরত করতে পারে না। স্বাভাবিক। আমাদের চোখ ছাড়া আর কোনোকিছুই দৃশ্যমান ছিল না আর সেই ঠাণ্ডাতেও পিনাকীর চোখে ক্যামেরা ছিল। সুতরাং দুই এ দুই এ চার করে চার-পাঁচ জন জ্যাকেট-টুপি পরা হদ্দ জোয়ান লোক মুখে একটা বিগলিত হাসি নিয়ে আবার একবার ডানহাত কপালে ঠেকাল, তারপর ডানহাতের বুড়ো আঙ্গুল ঠোঁটে ঠেকাল তারপর ডানহাত সামনের দিকে পেতে দিল।

অর্থাৎ কিনা, “বড্ড ঠাণ্ডা পড়েছে দাদা, এই যে আপনাকে আমাদের ছবি-টবি তুলতে দিলাম তার পরিবর্তে আমাদের গা গরম করার জন্য পানীয়ের টাকাকটা আপনিই দিয়ে যান।” প্রথম ঘটনার পুলিশ দাদু বা এই আগুন পোহানো জটলার লোকজন প্রত্যেকেরই কিন্তু নিজস্ব রোজকারের পথ আছে। সে পথে তাদের জীবনযাত্রার সংস্থানও হয়ে যায়। তাও এই অসুস্থ ভিক্ষাবৃত্তি। অবাক হবার বেশি সময় পেলাম না। আমাদের গাড়ি ততক্ষণে চলে এসেছে। গাড়িতে উঠে ভাবলাম, যতই মঙ্গল তাক করে রকেট ছুঁড়ে বিশ্ব-চরাচরকে তাক লাগিয়ে দাও না কেন বাপু, ভিক্ষুক মনোবৃত্তির আমূল উৎপাটন যতদিন না সম্ভব ততদিন মঙ্গল ওই আকাশেই বিরাজ করবে। এ তো আর অভাবের অভাব নয়, এ যে স্বভাবের অভাব। এ কি আর এতো সহজে দূর করা যায়? তাই না? কি বলেন?

মনে মনে এঁদের মঙ্গল কামনা করে গাড়ির জানলা দিয়ে বাইরে ঘন কুয়াশার দিকে তাকিয়ে রইলাম। তাড়াতাড়ি কুয়াশা কাটার কোন লক্ষণ তখনও অবধি ছিল না।

Saturday 3 January 2015

প্রতিদিন

ভন্ডামির চোরাস্রোতে গা ভাসিয়ে বেঁচে থাকা
প্রাণপণে চেপে রাখা নিজের অস্তিত্ব
প্রতিদিনের চলাফেরায় হাস্যস্পদ করে চলা নিজের বোধ
সে তো মৃত্যুরই সমতুল।

শুধু মাথার ওপরের সাদা রঙের ছাদ,
কালো হয়ে আসা পাখা আর
শীতের শিরশিরে হাওয়ায় দুলতে থাকা ঘরের কোণের একটুকরো ঝুল
জানে আমার অস্তিত্ব।
জানে কেমন করে শীতল মৃত্যু থেকে
একটু একটু করে বাঁচিয়ে তুলি আমার আমিকে।
 প্রতিদিন।

Thursday 1 January 2015

নিউ ইয়ার রেজোলিউশান


কেমন আছেন সবাই? এই পঁচিশ থেকে এক তারিখ পর্যন্ত হুল্লোড়-নাচানাচি-ভালমন্দ খাওয়াদাওয়া- বেড়াতে যাওয়া এসবের মধ্যে কি করেই বা খারাপ থাকা যায়? যদিও একত্রিশ তারিখের সন্ধ্যে আর এক তারিখের সকালের মধ্যে নতুন করে ভাল বা খারাপ থাকা কোনটাই বোঝার কোন উপায় নেই বলেই আমার মনে হয়, তবে কিনা এক তারিখ সকালে যদি আমি আপনাকে দাঁত বার করে “হ্যাপি নিউ ইয়ার” না বলি সাথে সাথেই আপনি আমার সারা বছরের পাওনা নম্বর থেকে ঘ্যাঁচ করে খানিকটা কেটে নেবেন আর আমার চরিত্র বিশ্লেষণের ফর্মে ‘দেমাকি’ কথাটার পাশে টিক মার্ক পড়ে যাবে। সে আমি সেই “হ্যাপি নিউ ইয়ার” এর পেছনে আপনাকে যতই গালমন্দ করি না কেন। সুতরাং একত্রিশ তারিখের একত্রিশ বছরের পুরনো জং ধরা আমি আর এক তারিখের আরও একদিন বেশি বয়সের আমি দুটোই আপাদমস্তক একটুও পরিবর্তিত না হয়ে সকলকে সকাল থেকে “হ্যাপি নিউ ইয়ার” বলে চলেছি। তারাও সমান দাঁত দেখিয়ে প্রত্যুত্তর দিয়ে চলেছে। বাকি সবকিছু আজন্ম কালের মত সমান নড়বড়ে গতিতে হয়ে চলেছে। আজ ২০১৫ র পয়লা জানুয়ারি বলে তার কোন ব্যত্যয় হয়নি।

তবে কিনা চারিদিকে নিউ ইয়ার রেজোলিউশান এর ঠেলায় মাঝে মাঝে দোটানায় পড়ে যাচ্ছি। কি রে বাবা আমারও কি কিছু প্রতিজ্ঞা-টটিজ্ঞা এইবেলা করে ফেলা উচিৎ নাকি? নইলে লোকে কি বলবে? চারপাশের জনগণ তো বটেই, এমন কি বড় বড় দিকপাল বিজ্ঞানীরা পর্যন্ত প্রতিজ্ঞা করে সেই রেজোলিউশান বিশ্বের এক নম্বর বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় ছাপিয়ে ফেলেছেন। সে তালিকায় কে নেই? মহাকাশ বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে জীববিজ্ঞানী, পদার্থবিজ্ঞানী সব সব। আর হেঁজিপেঁজি কেউ নয়, তাবড় তাবড় সব বিজ্ঞানীকুল ২০১৫ র তিনশ পঁয়ষট্টি দিনের মধ্যে কি কি করেই ফেলবেন তার তালিকা প্রকাশ করেছে নেচার জার্নাল।

NASA র প্রধান Ellen R. Stofan বলছেন ২০৩০ এর মধ্যে মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর জন্য প্রধান যেসব অগ্রগতি দরকার সেসব ২০১৫ র মধ্যে শেষ করে ফেলবেন। UK র প্রধান চিকিৎসা অধিকর্তা Sally Davies বলছেন ২০১৫ র মধ্যে Antimicrobial Research এ বিপ্লব এনে ফেলবেন। Bill and Melinda Foundation এর প্রধানের আবার প্রতিজ্ঞা এই বছরের মধ্যেই আফ্রিকা থেকে পোলিও আর ebola কে উৎখাত করেই ছাড়বেন। Sustainable energy-generation এর লক্ষ্যে চীনের রসায়নবিদ Yi Xie ঠিক করে ফেলেছেন যে নিজের ল্যাবরেটরিতে Photo, electro এবং chemical energy র পারস্পরিক পরিবর্তন সফল ভাবে করে ফেলবেন। UNFCCC এর অধিকর্তা বলছেন আমার আপনার দ্বারা পৃথিবীর জলহাওয়ার যে পরিবর্তন হচ্ছে তার বিরুদ্ধে লড়াইটা আরও জোরদার করবেন। CERN এর Director General হিসাবে তাঁর শেষ বছরে Rolf-Dieter Heuer বলছেন পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী শক্তির উৎস হিসাবে CERN এর কাজকে স্থাপন করতে চান। মেয়েদের আর বেশি করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে আসতে সাহায্য করবেন Gloria Bonder এবং Athene Donald। এরকমই সব ভাল ভাল প্রতিজ্ঞা। বেশি পড়তে গেলে এখানে দেখুন।

এত সবকিছু পড়ে-টড়ে ভাবলাম একটা নিউ ইয়ার রেজোলিউশান না হলেই নয়। কি এমন রেজোলিউশান নেওয়া যায়? যেটা কিনা যত শীঘ্র সম্ভব ভাঙতে হবে। হবেই। সেটাই নিয়ম। তো ভেবে-চিন্তে দেখলাম উপায় তো হাতের কাছেই রয়েছে। ঝট করে নিয়ে ফেললাম রেজোলিউশান। নিয়ে ফেলেই মনে মনে জোড়হাত করে বললাম, please ভগবান একটা দিন অন্তত এই পিতিজ্ঞেটি যেন রাখতে পারি। জীবনে পেথথম বার নেওয়া পিতিজ্ঞে যেন পেথথম দিনেই ভেসে না যায় ভগবান।

বলে টলে বেশ একটা স্ফূর্তি এল মনে। এই তো আমারও বেশ একটা রেজোলিউশান আছে। পেট টেট চুলকে শান্ত মনে নতুন বছরের মিষ্টি খেলাম (নিজের ‘জয়ঢাক’ নাম তাড়াতে আজ থেকে আর মিষ্টি খাবনা এই রেজোলিউশান আমি ভুলেও নেবনা কোনোদিন)। এবং অনেক জনের অনেক কথোপকথনের মাঝে তৎক্ষণাৎ নিজের রেজোলিউশান ভেঙ্গে বেরিয়ে এলাম।

এই আমার নিউ ইয়ার রেজোলিউশান এর গল্প। অ্যাঁ? রেজোলিউশানটা কি ছিল? এখনও আন্দাজ করতে পারলেন না? “নিজের চারপাশের শান্তিবলয় সঠিক রাখতে সঠিক সময় সঠিক কথাটা সঠিক স্বরে যেন বলতে পারি” - আরে বাবা এটা ছাড়া ক্যাবলাচরণ দ্যা গ্রেট-এর আর কি রেজোলিউশান হতে পারে? যাই হোক আপাতত সক্কলের আগে রেজোলিউশান ভেঙ্গে বেরিয়ে আসার প্রতিযোগিতায় হই হই করে ফার্স্ট হয়ে গিয়ে দারুণ আহ্লাদিত হয়ে পড়েছি। বাড়ি ফিরেই সেই আনন্দে আর চাট্টি ল্যাংচা-মোয়া-নারকেল নাড়ু খাব কিনা ভাবছি।

নতুন বছর সকলের খুব ভাল কাটুক এই কামনা করি। আর যে যার রেজোলিউশান সঠিক সময়ে সফল ভাবে ভেঙ্গে বেরিয়ে এসে পুনর্মূষিকাবস্থা প্রাপ্ত হন এই শুভেচ্ছা রইল। ভাল থাকবেন সক্কলে।