Sunday 29 November 2015

চা টা খাবো

Google image থেকে 

গদাম কয় গদামি
জানি তোর বদামি।
আমরা দুটি গাধা রে
গান ধরেছি সা ধা রে।
সুরের চোটে ফাটল ছাদ
সেই থেকে সুর রইল বাদ।
সেই থেকে মন বেজায় ব্যোম
হাত পা ছুঁড়ি দমাদ্দম।
হাত পা ছুঁড়ে ভাঙ্গল কাপ
চা টা খাব কোথায় বাপ?
একটা বাটিও নেই বাকি?
ঠিক বলছ? বাপরে সেকি?
এতো দেখি বেজায় রাগ!
আচ্ছা ছাড়ো, যাক গে যাক।
এবার চল চা টা খাবো
কাপটা না হয় আমিই দেব।
সেই ভাল বেশ চলো চলো
মনটা বরং হবে ভালো।

বড় হয়ে ওঠা


অনেকদিন আগে, সম্ভবত জুন মাস নাগাদ যখন দুই এক দিনের জন্য ব্লগে কিছু লেখার চেষ্টা করেছিলাম তখন বলেছিলাম যে, ভাবনার সহজ প্রকাশ খাতায় কলমে তখনই সম্ভব যখন মস্তিস্ক-হৃদয়-আর পারিপার্শ্বিকতা সবাই একসাথে কোরাস গাইতে পারে। কোনভাবেই সেই কোরাস গানটিকে একসুরে বেঁধে উঠতে পারা যাচ্ছিল না এতদিন। ইদানিং পালে খানিক অনুকূল হাওয়া বইতে শুরু করেছে বলেই মনে হচ্ছে। জানিনা এই মনে হওয়াটা কতখানি ঠিক। সবটাই আশা করে থাকা মনের ভ্রম, যা অদূর ভবিষ্যতে আবারও ভুল প্রমানিত হতে চলেছে? নাকি সত্যি সত্যি গা ঝেড়ে উঠে দাঁড়াবার সময় এসেছে? ভবিষ্যত এর ভাবনা তুলে রেখেই বলি, যাই হোক না কেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে খানিকটা লেখালেখি করা যেতেই পারে। অন্তত মন তাতে বিশেষ বাগড়া দেবে বলে মনে হয় না। বেশ কিছু ঋণাত্মক তরঙ্গের ধাক্কা খেয়ে বেসামাল হয়ে মুখ থুবড়ে পড়তে পড়তেও সামাল সামাল বলে সামলে নেওয়া গেছে। তাতে হাত পা ছড়ে-কেটে গেছে হয়ত কিন্তু বড়সড় স্থায়ী ক্ষতি আটকানো গেছে। তাতে চির-অস্থির ঢেউ এর ওপর রাগ হয়েছে। এবড়ো-খেবড়ো সাগরতটের ওপর হতাশায় লাথি কষাতে ইচ্ছে হয়েছে। সব ছেড়ে দিয়ে সাগর পাড়ি দেবার ইচ্ছে ত্যাগ করে ডাঙার নিসংশয় জীবন কাটাবার মতন আত্মবিরোধী ইচ্ছে পর্যন্ত হয়েছে। কিন্তু সত্যিটা এই যে শেষ পর্যন্ত টিকে গেছি। 

চেষ্টা করলে হয়ত প্রতিটি মানুষের সমস্ত জীবনকালটিকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ভাগে ভাগ করা যায়। সে তিনি যতই বিখ্যাত বা অখ্যাত ব্যক্তি হন না কেন। বিখ্যাতদের জীবনের সেইসব অখ্যাত অধ্যায় থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়াবার প্রেরণা পাই। পরিস্থিতি মোকাবিলা করার সাহস পাই। সেই সব ধাক্কা খাওয়া অধ্যায় থেকে আমরা আমাদের ওপর এসে পড়া ঢেউ এর ধাক্কা সামলে বড় হয়ে উঠি। প্রতিটি মানুষের জীবনেই বড় হয়ে ওঠার এরকম অধ্যায়গুলি আসে আর তার ধাক্কা সামলাতে সামলাতে একটা লাভ হয় যে মানুষটি সত্যিকারের প্রফেশনাল-প্রাকটিক্যাল-আর বাইরের পৃথিবীর জন্য সে সন্দেহশীল হয়ে ওঠে। 

এই লেখাটি হয়ত কিছুটা স্বগতোক্তি। হয়ত কিছুটা ব্যক্তিগত, এখানে লেখার বিষয় নয়। তাও লিখছি। আমি দেখেছি আমার কখনো খুব খারাপ কিছু হয় না। খুব টালমাটাল অবস্থার মধ্যে দিয়ে হয়ত যেতে হয়েছে। অকারণে অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হয়েছে। কিন্তু মারাত্মক ক্ষতি কিছু হয়নি। হয়ত আমি বিশ্বাস করি যে আমার কোনো বড় ক্ষতি হতে পারে না, বা যেকোনো খারাপ পরিস্থিতিতে পড়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসার প্রানপণ একটা চেষ্টা থাকে বলেই হয়ত বাইরে থেকে বড়সড় কোনো পরিবর্তন দেখা যায় না। যাই হোক না কেন, এরকম পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়না বা হয়নি এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া দুর্লভ। স্বেচ্ছায় সমতল ছেড়ে যাঁরা হিমালয় এর শোভা দেখার মনস্থির করেছেন তাঁদের জন্য যে কম বেশি প্রতিকূলতা অপেক্ষা করেই সেতো বলাই বাহুল্য। আর এইসবের ভালো দিকটি এই যে, মানুষ চিনতে পারা-দেহ মনের শান্তি বিঘ্নিতকারী মানুষদের থেকে সযত্নে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া-মেরুদন্ডহীন স্বার্থসর্বস্ব মানুষদের চোখের দিকে তাকিয়ে তাদের অন্যায় কৃতকর্মের প্রতিবাদ করার সাহস অর্জন করা-নিজের সামান্য লাভের আশায় এদের অন্যায়কে সহ্য না করার সহজ শক্তি যে নিজের মধ্যে আছে তাকে চিনতে পারা- আর তার ফলে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া। আর সবচেয়ে বড় কথা, মেরুদন্ড সোজা রেখে, মিথ্যাবাদীর চোখে চোখ রেখে সত্যিকথা বলার সাহস থাকার অপরাধে আশেপাশের সমাজে যে অপবাদ ছড়াবার কথা সেই কথা আর সমস্ত বিপ্রতীপ মানুষজন কে অনায়াসে পাত্তা না দিয়ে পাখির চোখের মত নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে যাবার মতন বুকের পাটা তৈরী হয়ে যাওয়া। 

সুতরাং, প্রতিকূলতা কারো জীবনেই কখনোই হয়ত কাম্য নয়। কিন্তু যদি তা এসেই যায়, তাকে বুক দিয়ে ঠেকিয়ে রাখতে গিয়ে প্রতিকূলতাকে ভয় না পেয়ে বুক চিতিয়ে সামনে দাঁড়াবার মতন একটা পাথুরে বুক যে তৈরী হয়ে যেতে পারে সেটিও কম লাভ নয়। সেটাই হয়ত সামনাসামনি প্রত্যক্ষ করার জন্য সদ্যবিলীয়মান কিছু পরিস্থিতির প্রয়োজন ছিল আমার 'বড় হয়ে ওঠার জন্য।'