সাধারণত: আমরা বাড়িতে কাউকে থাকতে দিতে না করি না। আমরা দুজন ছাড়াও গুটি ছয়-সাত কাঠবেড়ালি, অন্তত: গোটা কুড়ি পায়রা, দুটি কুকুর- এঁনারা দিনের বেশ কিছুটা সময় আমাদের সাথেই খাওয়াদাওয়া-ওঠা বসা করেন। এর মধ্যে আমাদের দুই বন্ধু, হাচিকো আর হাবা (হাচিকোর বান্ধবী) যারা কিনা জেনেটিক্সগত ভাবে কুকুর প্রজাতির, তাঁদের আমরাই নেমতন্ন করে ডেকে এনেছি। এজন্য বাইরের দরজার সামনেটা, মাঝে মাঝে ভেতরটাও তাদের গায়ের ধুলোতে এতই নোংরা হয়ে থাকে যে বাইরের লোকজন আসলে আমরা স্মার্টলি "এ হে হে !ইস ! কি নোংরা করেছে এরা! এই এদের জন্য কিচ্ছু পরিস্কার থাকেনা আমাদের, এই- এই যে -এখান দিয়ে আসুন-সাবধান" এইসব বলতে থাকি (রোজ একবার করে ঝাড়ু মেরে দিলেই হয়, কিন্তু ওই আর কি, বুঝতেই তো পারছেন)। বাকিরা নিজেরাই এসেছেন এবং খেয়েছেন আর মনের আনন্দে ঘরদোর নোংরা করছেন। বারান্দার হাবিজাবির মধ্যে পায়রারা ডিম পেড়েছেন তাই আমরা ওখানে যেতে পারিনা, পরিস্কার ও করতে পারিনা (পরিস্কার না করার দারুন অজুহাত এটা, আমি তো চাই সারাবছরই ওখানে পায়রার বাসা থাকুক)। বাথরুমে exhaust fan এর ফোঁকরে পায়রার বাসা তাই আমরা এই প্রচন্ড গরমে বাথরুমের exhaust চালাতে পারিনা। মাঝে মাঝে ওনাদের ডানা ঝাপটানির চোটে খসে পড়া পালক, বাসার কাঠিকুঠি, ইত্যাদি আরো অনেক কিছুর জন্য বাথরুমটা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে ওঠে (এটাকে পরিস্কার না করে থাকা যায় না বলে অগত্যা করতেই হয়)। এছাড়া টিকটিকি, আরশোলা, মশা মাছি ইত্যাদির কথা ছেড়ে দিলাম।
এহেন আমাদের (যারা অত্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া হাত-পা নাড়াচাড়া তে বিশ্বাসী নই) আজ সকালে একটা বাজে কাজ করতে হয়েছে। একটা বোলতার চাক খুঁচিয়ে ভাঙ্গতে হয়েছে। খুবই ছোট্ট চাক যদিও, সবমিলিয়ে ১০-১২ খানা বোলতা ছিল। তাও এই অপ্রিয় কাজটা সকালবেলা হাত-পা নেড়ে করতে হয়েছে। কারণ আমি সমস্ত প্রাণীজগত কে মন থেকে ভালোবাসলেও বোলতা - ভীমরুল জাতীয় জীবদের আমি মোটেই পছন্দ করি না (সাপ, টিকটিকি, আরশোলা ইত্যাদি মাথায় রেখেও বলছি)। তাই কাল থেকে জানালার বাইরে বোলতার চাক টাকে দেখেই আমার মনে হচ্ছিল কথন ওটাকে ভাঙ্গা হবে। ভাবছেন কি নিষ্ঠুর! ভাববেন ই তো। ওরা যে বেছে বেছে আমার সাথেই দিনের পর দিন নিষ্ঠুরতা করে চলেছে তার বেলা?
তখন কোন ক্লাস এ পড়ি ভুলে গেছি। প্রাইমারিতে হবে। দোতলার বারান্দায় গেছি কেন কে জানে, হটাত্ কোথাও কিছু নেই সামনে কিছু একটা মিসাইল এর স্পিড এ বঁ ও ও ও ও ও...... করে চলে গেল। আর আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখলাম উপরের ঠোঁটের বাঁদিক টা চড়চড় করে ফুলে গেল, দুচার সেকেন্ড পরে যন্ত্রণা টা টের পেলাম। চ্যাঁচাতে চ্যাঁচাতে নিচে আসার সিঁড়িতে বসে শুনলাম মা বলছে ওপরে বোলতার চাক ছিল না একটা? নিশ্চয়ই খুঁচিয়েছিস? বুঝুন ব্যাপারটা! আমি বলে কিনা শান্তশিষ্ট মানুষ এমনিই গেছি ওপরে। বেমক্কা ওরাই তো আমায় attack করলো। সবসময়ই মা আমার দোষ দেখে। যাক গে, সবকিছুরই তো ভালো দিক থাকে। সেদিনও ছিল। আমাকে সেদিন একটা কাঠি আইসক্রিম (ক্রিম না বলাই ভালো তাও বলি, মানে যেগুলোতে ক্রিম থাকে না, জল জল, চুষে খেতে হয়, নানা রকম রঙের হয়) কিনে দেওয়া হয়েছিল। ঠোঁটে লাগাবার জন্য। বুঝতেই পারছেন সেটা শেষ পর্যন্ত ঠোঁটের বাইরে বেশিক্ষণ থাকেনি। এমনিতে আইসক্রিম খাওয়া আমার নিষিদ্ধ ছিল।
দ্বিতীয় ঘটনাটা আর একটু heavy dose এর। একদিন সকালে বই খাতা নিয়ে জানলার ধারে বসে একবার জানলার দিকে আর একবার বই এর দিকে চেয়ে আকাশ পাতাল ভাবছি (মা ভাবছে পড়ছি), হঠাত শুনলাম মা ডাকছে "আয় দেথে যা আনারস গাছে কেমন একটা বাসা করেছে......"। আমি তো 'আয় দেখে যা....' পর্যন্ত শুনেই খাট থেকে নেমে সোজা অকুস্হলে। বই ছেড়ে ওঠার চান্স পেয়েছি এই যথেষ্ট। কি দেখতে হবে না জানলেও চলবে। মা বলল দূর থেকে দেখ। তা মায়ের কথা কে আর কবে ফার্স্ট চান্স এই শুনেছে? আমিও যথারীতি 'দাঁড়াও না, কি হবে' বলে যথাসাধ্য সামনে গিয়ে মাথা ঝুঁকিয়ে গবেষণা করতে শুরু করলাম। "দেখো মা ঠিক যেন আনারসের মতন করেই বানিয়েছে! আচ্ছা এটা কি মাটি দিয়ে বানানো ? এরা কি করে মাটি নিয়ে আসে?" এইসব জটিল প্রশ্নে আমি যখন মগ্ন তখন বোধহয় আমারই হাত-পা লেগে গাছটা একটু নড়ে গেছিল (আমি তো নাড়াইনি), হঠাত "কোথা হইতে কি হইয়া গেল" চাক ভর্তি ভীমরুল রে রে করে আমার জামার ফাঁকফোঁকর দিয়ে পিঠ, পেট এ ঢুকে গেল। মুখ, হাত পা ইত্যাদির অবস্থা ও কহতব্য নয়। এই বিষয়টার জ্বালা যন্ত্রণা সম্পর্কে আর কিছু বলব না। যাঁরা একটিও ভীমরুলের কামড় খেয়েছেন তাঁরা জানেন একসাথে অন্ত্যত ২০-৩০ টি ভীমরুলের কামড় খেয়ে একটা ১২-১৪ বছরের মেয়ের কি কি হতে পারে। শুধু এটুকু বলি এটারও একটা ভালো দিক আমি খুঁজে পেয়েছিলাম। সেটা হলো আমায় চারদিন স্কুল এ যেতে হয়নি। সারা দিনরাত আমার দুটো প্রিয় কাজ করছিলাম। শুধু ঘুমোচ্ছিলাম আর ঘুম ভাঙলেই জানলার দিকে তাকিয়ে আকাশ পাতাল ভাবতে পারছিলাম কেউ পড়তে বসতে বলছিল না। এর পরেও কি ওদের প্রতি আমার শিব জ্ঞানে জীব সেবার মনোবৃত্তি থাকে বলুন?
এহেন আমাদের (যারা অত্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া হাত-পা নাড়াচাড়া তে বিশ্বাসী নই) আজ সকালে একটা বাজে কাজ করতে হয়েছে। একটা বোলতার চাক খুঁচিয়ে ভাঙ্গতে হয়েছে। খুবই ছোট্ট চাক যদিও, সবমিলিয়ে ১০-১২ খানা বোলতা ছিল। তাও এই অপ্রিয় কাজটা সকালবেলা হাত-পা নেড়ে করতে হয়েছে। কারণ আমি সমস্ত প্রাণীজগত কে মন থেকে ভালোবাসলেও বোলতা - ভীমরুল জাতীয় জীবদের আমি মোটেই পছন্দ করি না (সাপ, টিকটিকি, আরশোলা ইত্যাদি মাথায় রেখেও বলছি)। তাই কাল থেকে জানালার বাইরে বোলতার চাক টাকে দেখেই আমার মনে হচ্ছিল কথন ওটাকে ভাঙ্গা হবে। ভাবছেন কি নিষ্ঠুর! ভাববেন ই তো। ওরা যে বেছে বেছে আমার সাথেই দিনের পর দিন নিষ্ঠুরতা করে চলেছে তার বেলা?
তখন কোন ক্লাস এ পড়ি ভুলে গেছি। প্রাইমারিতে হবে। দোতলার বারান্দায় গেছি কেন কে জানে, হটাত্ কোথাও কিছু নেই সামনে কিছু একটা মিসাইল এর স্পিড এ বঁ ও ও ও ও ও...... করে চলে গেল। আর আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখলাম উপরের ঠোঁটের বাঁদিক টা চড়চড় করে ফুলে গেল, দুচার সেকেন্ড পরে যন্ত্রণা টা টের পেলাম। চ্যাঁচাতে চ্যাঁচাতে নিচে আসার সিঁড়িতে বসে শুনলাম মা বলছে ওপরে বোলতার চাক ছিল না একটা? নিশ্চয়ই খুঁচিয়েছিস? বুঝুন ব্যাপারটা! আমি বলে কিনা শান্তশিষ্ট মানুষ এমনিই গেছি ওপরে। বেমক্কা ওরাই তো আমায় attack করলো। সবসময়ই মা আমার দোষ দেখে। যাক গে, সবকিছুরই তো ভালো দিক থাকে। সেদিনও ছিল। আমাকে সেদিন একটা কাঠি আইসক্রিম (ক্রিম না বলাই ভালো তাও বলি, মানে যেগুলোতে ক্রিম থাকে না, জল জল, চুষে খেতে হয়, নানা রকম রঙের হয়) কিনে দেওয়া হয়েছিল। ঠোঁটে লাগাবার জন্য। বুঝতেই পারছেন সেটা শেষ পর্যন্ত ঠোঁটের বাইরে বেশিক্ষণ থাকেনি। এমনিতে আইসক্রিম খাওয়া আমার নিষিদ্ধ ছিল।
দ্বিতীয় ঘটনাটা আর একটু heavy dose এর। একদিন সকালে বই খাতা নিয়ে জানলার ধারে বসে একবার জানলার দিকে আর একবার বই এর দিকে চেয়ে আকাশ পাতাল ভাবছি (মা ভাবছে পড়ছি), হঠাত শুনলাম মা ডাকছে "আয় দেথে যা আনারস গাছে কেমন একটা বাসা করেছে......"। আমি তো 'আয় দেখে যা....' পর্যন্ত শুনেই খাট থেকে নেমে সোজা অকুস্হলে। বই ছেড়ে ওঠার চান্স পেয়েছি এই যথেষ্ট। কি দেখতে হবে না জানলেও চলবে। মা বলল দূর থেকে দেখ। তা মায়ের কথা কে আর কবে ফার্স্ট চান্স এই শুনেছে? আমিও যথারীতি 'দাঁড়াও না, কি হবে' বলে যথাসাধ্য সামনে গিয়ে মাথা ঝুঁকিয়ে গবেষণা করতে শুরু করলাম। "দেখো মা ঠিক যেন আনারসের মতন করেই বানিয়েছে! আচ্ছা এটা কি মাটি দিয়ে বানানো ? এরা কি করে মাটি নিয়ে আসে?" এইসব জটিল প্রশ্নে আমি যখন মগ্ন তখন বোধহয় আমারই হাত-পা লেগে গাছটা একটু নড়ে গেছিল (আমি তো নাড়াইনি), হঠাত "কোথা হইতে কি হইয়া গেল" চাক ভর্তি ভীমরুল রে রে করে আমার জামার ফাঁকফোঁকর দিয়ে পিঠ, পেট এ ঢুকে গেল। মুখ, হাত পা ইত্যাদির অবস্থা ও কহতব্য নয়। এই বিষয়টার জ্বালা যন্ত্রণা সম্পর্কে আর কিছু বলব না। যাঁরা একটিও ভীমরুলের কামড় খেয়েছেন তাঁরা জানেন একসাথে অন্ত্যত ২০-৩০ টি ভীমরুলের কামড় খেয়ে একটা ১২-১৪ বছরের মেয়ের কি কি হতে পারে। শুধু এটুকু বলি এটারও একটা ভালো দিক আমি খুঁজে পেয়েছিলাম। সেটা হলো আমায় চারদিন স্কুল এ যেতে হয়নি। সারা দিনরাত আমার দুটো প্রিয় কাজ করছিলাম। শুধু ঘুমোচ্ছিলাম আর ঘুম ভাঙলেই জানলার দিকে তাকিয়ে আকাশ পাতাল ভাবতে পারছিলাম কেউ পড়তে বসতে বলছিল না। এর পরেও কি ওদের প্রতি আমার শিব জ্ঞানে জীব সেবার মনোবৃত্তি থাকে বলুন?
0 comments:
Post a Comment