প্রতিদিনের জীবন মানে এমন অনেক কিছুরই সম্মুখীন হতে হবে যা আমার পছন্দ নয়। কিছু ঘটনায় দুঃখ পাবো, কিছু ঘটনায় ভীষণ রাগ হবে, কিছু ঘটনায় কিছু না করতে পারার হতাশা থাকবে। এতো স্বাভাবিক। কিন্তু তার মধ্যে এমন কিছু ঘটনাও তো থাকবে যা আনন্দের, যা সাহস জোগাবে, যা উদাহরণস্বরূপ সকলকে জানাতে ইচ্ছে করবে, যা ভীষণ নেগেটিভিটির মধ্যেও বুকভরে শ্বাস নেবার কারণ হবে। থাকবে তো? নাকি একটা সময়কালে যা যা ঘটছে সব- সমস্তটাই নেগেটিভ? সমস্তটাই হতাশার, রাগের, দুরছাই করার? ভাল খারাপ মিলিয়েই তো বিবর্তন হয় নাকি রে বাবা!
চিরকাল যা লেখা হয়ে এসেছে, বলা হয়ে এসেছে সেইটাই ভবিষ্যৎকালে আজকের সময়টার ইতিহাস হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আমি আজকে যা লিখছি, বলছি, আঁকছি, গাইছি অর্থাৎ যা এভিডেন্স হিসেবে রয়ে যাচ্ছে ভবিষ্যতের জন্য, সেটি আমি সচেতনভাবে রেখে যাচ্ছি তো? নাকি বিচার বিবেচনাহীন জাস্ট একটা ইনস্ট্যান্ট ইমোশন রেখে দিয়ে, সমালোচনা করেই সমাজ এবং কাল সচেতনতার দায় সারছি?
আমার দিক থেকে আমার চারপাশের ভাল খারাপে যতটুকুর কিছুটা হলেও আমার দায় রয়েছে বা চাইলে আমি খারাপ থেকে ভালর দিকে আনতে পারি সে চেষ্টা আমি করছি তো? মেরুর বরফ গলে যাচ্ছে, মেরুভাল্লুক মারা যাচ্ছে, সেজন্য ডাইরেক্ট আমার কিছু করার নেই। আমি মেরুতে গিয়ে তাপমাত্রা কমাতে পারবো না। ভাল্লুকদের রিহ্যাবিলিটেশন এর ব্যবস্থা করতে পারবো না। কিন্তু রাত্রে এসি-র ব্যবহার কমাতে পারবো। সেটুকু আমার হাতে আছে। সেটা করছি কিনা সেটি ভেবে তারপর নয় গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে নিজের উষ্মার কথা লিখি। বা নিজের ঘরের বাচ্চাটা রাস্তার কুকুর বেড়ালকে খাবার দিতে চাইলে তাকে "কামড়ে দিলে কি হবে" বা "রোগের ডিপো" বলে ভয় পাইয়ে ঘেঁটি ধরে ঘরে না ঢুকিয়ে মানুষ পশুর সহাবস্থানের গল্প শোনাই। তাতে সে বড় হয়ে প্রতিক্রিয়াশীল জনতা না হয়ে স্থিতধী বিবেচনাশীল নাগরিক হবার একটা পাঠ বাড়ি থেকেই পাবে। ঠেকায় পড়ে কষ্ট পেয়ে শিখতে না হয়।
যা যা খারাপ ঘটছে তাকে রেখে যাবার প্রয়োজন বোধ করছি, কিন্তু ভালো যা ঘটছে সেটিকে সামনে আনার দায় কি নেই? মানুষের মৃত্যুর খবর, অমানবিকতার খবর, হিংসার খবর যত দেখা যায়, মানুষের মৃত্যু পেরিয়ে বেঁচে থাকার খবর, মানবিকতার খবর, পারস্পরিক সহায়তার মাধ্যমে সমস্যা উত্তরণের খবর তেমনটা সামনে আসে না কেন? কেন একজন মানুষ সরকারি অসহযোগিতার খবর যতটা উষ্মার সাথে প্রকাশ করেন, সহায়তার খবরের পেছনে একটা শব্দও প্রকাশ করেন না? নাকি তিনি যে বেঁচে বর্তে আছেন, মতপ্রকাশ করছেন তা নিঃশ্বাস নেবার মতোই স্বাভাবিক? তিনি উত্তর কোরিয়ায় বা সিরিয়ায় জন্মাননি সেজন্য তার কোনো ধন্যবাদ দেবার কি নেই ঈশ্বরের কাছে?
আমি জানি যে যেভাবেই থাকুন না কেন তার থেকে অনেক ভাল করে থাকা যায়, সুতরাং যা ভালো নয় তার জন্য দাবি করা বা উষ্মা প্রকাশ করাটা তাঁর অধিকার। কিন্তু হতাশা বা দাবিদাওয়ার শেষে যে সামান্যটুকু তাঁর আছে সেটুকুর উল্লেখ কেন তিনি করবেন না? ভালকে সামনে না আনলে ভাল এপ্রিসিয়েটেড না হলে কেউ আর ভালো কিছু করবেন না। এটা পরীক্ষিত মানবধর্ম। human nature .বাচ্চা অনেক দুস্টুমির মধ্যেও ভাল কিছু কাজ করলে সেটাকে acknowledge করলে, ভাল বললে, appreciate করলে, সে পরের বার আবার ভাল কাজ করতে চেষ্টা করে যাতে সে এপ্রিসিয়েশন পায়। আপনি মিথ্যে কথা বললে বাচ্চাকে চড়-থাপ্পড় মেরে ফাটিয়ে দিচ্ছেন অথচ সত্যি কথা বললে তার জন্য একটি বাক্যও খরচ করছেন না যেন এত হবারই ছিল। হ্যাঁ হবারই ছিল কিন্তু যতক্ষণ না সেজন্য তাকে একটি মিষ্টবাক্য খরচ করছেন ততক্ষন কিন্তু সে দোলাচলেই থাকবে যে কাজটা ঠিক না ভুল হলো। চড় মারলে যেমন খারাপ কাজটা করবে না পিঠে হাত না রাখলে ভালটাও কিন্তু করবে না।
মানুষ হিসেবে আমার সমালোচনার অধিকার যদি থাকে তাহলে একশটা খারাপের মধ্যেও যদি একদল আলোর সন্ধানী মানুষ আশার কথা, আলোর কথা শোনায়, খারাপটাকে গিলে নিয়ে, সহ্য করে, বা তার জন্য যা করার ঢাক না পিটিয়ে করে তারপর ভালটাকে হাইলাইট করে, আমার খারাপ ইতিহাসটার পাশাপাশি ভালো যা হয়েছে সেটিকেও ভবিষ্যতের জন্য লিপিবদ্ধ করে যেতে চায় তাকে বিচার করার আগে, অসংবেদনশীল, ঠুনকো মানসিকতার জনতা ভেবে নিজেকে উচ্চাসনে বসাবার আগে ভেবে নেওয়া ভালো যে কোনটি ভাল কোনটি খারাপ তার বিচার কে করবে? খুব খারাপ সময়ে হা হুতাশ করে মন ভেঙে বসে থাকা নাকি খারাপটাকে কাটিয়ে ওঠার জন্য যেটুকু নিজের করার সেটুকু করার পরে ভালটিকে সামনে এনে মনোবল বাড়িয়ে আবার লড়াইয়ের মাঠে নামা? কে কোনদিকদিয়ে নিঃস্বার্থ কাজ করে চলেছেন, সারা জীবন ধরেই করে চলেছেন, তার থেকে আলোটা আরো চারটে লোকের মধ্যে নিঃশব্দে ছড়িয়ে দিচ্ছেন কেউ জানে না। সমালোচনার আগে মনে মনে অন্ততঃ সেটির জন্য ধন্যবাদ স্বীকার করে তারপর বরং ফাটিয়ে সমালোচনা করুন।
আমার যেমন বিষয় অনেক আছে সমালোচনার। দেখে শুনে পছন্দ মত বেছে নিলেই হলো। তেমনি আপনারও এমন কিছু বিষয় আছে যা আপনি নিঃশব্দে নিঃস্বার্থ ভাবে করে যাচ্ছেন যা আমি জানি না বলে কেবল আমার পছন্দের বিষয়ে কেন কথা বলছেন না সে নিয়ে গলা ফাটিয়ে সমালোচনার ঝড় বইয়ে দিচ্ছি। অথচ দুজনেই নিজের নিজের বিষয়ে সিন্সিয়ারলি কাজ করছি কিন্তু। নইলে পৃথিবী এখনো আমাদের সহ্য করছে কি করে? অথচ দুজনেই ভাবছি আমি কেমন কাজের আর ও কেমন নিস্কর্মা, সুখী সুখী সখি টাইপ। আমি কেমন এই কদিনের মধ্যেই সমাজ বদলে ফেলবো পণ করেছি। আর ও কেবলই তাতে বাগড়া দিচ্ছে। আর 'সময়' এই ভেবেই আমোদ পাচ্ছে যে, "'বদল', সেতো আমার হাতে। কোনটা রাখবো কোনটা নয় সে এই দুই পালোয়ানের কেউই জানে না। অথচ দেখো কেমন গলা ফাটিয়ে বেকুবের মতন লড়াই করছে।"
চিরকাল যা লেখা হয়ে এসেছে, বলা হয়ে এসেছে সেইটাই ভবিষ্যৎকালে আজকের সময়টার ইতিহাস হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আমি আজকে যা লিখছি, বলছি, আঁকছি, গাইছি অর্থাৎ যা এভিডেন্স হিসেবে রয়ে যাচ্ছে ভবিষ্যতের জন্য, সেটি আমি সচেতনভাবে রেখে যাচ্ছি তো? নাকি বিচার বিবেচনাহীন জাস্ট একটা ইনস্ট্যান্ট ইমোশন রেখে দিয়ে, সমালোচনা করেই সমাজ এবং কাল সচেতনতার দায় সারছি?
আমার দিক থেকে আমার চারপাশের ভাল খারাপে যতটুকুর কিছুটা হলেও আমার দায় রয়েছে বা চাইলে আমি খারাপ থেকে ভালর দিকে আনতে পারি সে চেষ্টা আমি করছি তো? মেরুর বরফ গলে যাচ্ছে, মেরুভাল্লুক মারা যাচ্ছে, সেজন্য ডাইরেক্ট আমার কিছু করার নেই। আমি মেরুতে গিয়ে তাপমাত্রা কমাতে পারবো না। ভাল্লুকদের রিহ্যাবিলিটেশন এর ব্যবস্থা করতে পারবো না। কিন্তু রাত্রে এসি-র ব্যবহার কমাতে পারবো। সেটুকু আমার হাতে আছে। সেটা করছি কিনা সেটি ভেবে তারপর নয় গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে নিজের উষ্মার কথা লিখি। বা নিজের ঘরের বাচ্চাটা রাস্তার কুকুর বেড়ালকে খাবার দিতে চাইলে তাকে "কামড়ে দিলে কি হবে" বা "রোগের ডিপো" বলে ভয় পাইয়ে ঘেঁটি ধরে ঘরে না ঢুকিয়ে মানুষ পশুর সহাবস্থানের গল্প শোনাই। তাতে সে বড় হয়ে প্রতিক্রিয়াশীল জনতা না হয়ে স্থিতধী বিবেচনাশীল নাগরিক হবার একটা পাঠ বাড়ি থেকেই পাবে। ঠেকায় পড়ে কষ্ট পেয়ে শিখতে না হয়।
যা যা খারাপ ঘটছে তাকে রেখে যাবার প্রয়োজন বোধ করছি, কিন্তু ভালো যা ঘটছে সেটিকে সামনে আনার দায় কি নেই? মানুষের মৃত্যুর খবর, অমানবিকতার খবর, হিংসার খবর যত দেখা যায়, মানুষের মৃত্যু পেরিয়ে বেঁচে থাকার খবর, মানবিকতার খবর, পারস্পরিক সহায়তার মাধ্যমে সমস্যা উত্তরণের খবর তেমনটা সামনে আসে না কেন? কেন একজন মানুষ সরকারি অসহযোগিতার খবর যতটা উষ্মার সাথে প্রকাশ করেন, সহায়তার খবরের পেছনে একটা শব্দও প্রকাশ করেন না? নাকি তিনি যে বেঁচে বর্তে আছেন, মতপ্রকাশ করছেন তা নিঃশ্বাস নেবার মতোই স্বাভাবিক? তিনি উত্তর কোরিয়ায় বা সিরিয়ায় জন্মাননি সেজন্য তার কোনো ধন্যবাদ দেবার কি নেই ঈশ্বরের কাছে?
আমি জানি যে যেভাবেই থাকুন না কেন তার থেকে অনেক ভাল করে থাকা যায়, সুতরাং যা ভালো নয় তার জন্য দাবি করা বা উষ্মা প্রকাশ করাটা তাঁর অধিকার। কিন্তু হতাশা বা দাবিদাওয়ার শেষে যে সামান্যটুকু তাঁর আছে সেটুকুর উল্লেখ কেন তিনি করবেন না? ভালকে সামনে না আনলে ভাল এপ্রিসিয়েটেড না হলে কেউ আর ভালো কিছু করবেন না। এটা পরীক্ষিত মানবধর্ম। human nature .বাচ্চা অনেক দুস্টুমির মধ্যেও ভাল কিছু কাজ করলে সেটাকে acknowledge করলে, ভাল বললে, appreciate করলে, সে পরের বার আবার ভাল কাজ করতে চেষ্টা করে যাতে সে এপ্রিসিয়েশন পায়। আপনি মিথ্যে কথা বললে বাচ্চাকে চড়-থাপ্পড় মেরে ফাটিয়ে দিচ্ছেন অথচ সত্যি কথা বললে তার জন্য একটি বাক্যও খরচ করছেন না যেন এত হবারই ছিল। হ্যাঁ হবারই ছিল কিন্তু যতক্ষণ না সেজন্য তাকে একটি মিষ্টবাক্য খরচ করছেন ততক্ষন কিন্তু সে দোলাচলেই থাকবে যে কাজটা ঠিক না ভুল হলো। চড় মারলে যেমন খারাপ কাজটা করবে না পিঠে হাত না রাখলে ভালটাও কিন্তু করবে না।
মানুষ হিসেবে আমার সমালোচনার অধিকার যদি থাকে তাহলে একশটা খারাপের মধ্যেও যদি একদল আলোর সন্ধানী মানুষ আশার কথা, আলোর কথা শোনায়, খারাপটাকে গিলে নিয়ে, সহ্য করে, বা তার জন্য যা করার ঢাক না পিটিয়ে করে তারপর ভালটাকে হাইলাইট করে, আমার খারাপ ইতিহাসটার পাশাপাশি ভালো যা হয়েছে সেটিকেও ভবিষ্যতের জন্য লিপিবদ্ধ করে যেতে চায় তাকে বিচার করার আগে, অসংবেদনশীল, ঠুনকো মানসিকতার জনতা ভেবে নিজেকে উচ্চাসনে বসাবার আগে ভেবে নেওয়া ভালো যে কোনটি ভাল কোনটি খারাপ তার বিচার কে করবে? খুব খারাপ সময়ে হা হুতাশ করে মন ভেঙে বসে থাকা নাকি খারাপটাকে কাটিয়ে ওঠার জন্য যেটুকু নিজের করার সেটুকু করার পরে ভালটিকে সামনে এনে মনোবল বাড়িয়ে আবার লড়াইয়ের মাঠে নামা? কে কোনদিকদিয়ে নিঃস্বার্থ কাজ করে চলেছেন, সারা জীবন ধরেই করে চলেছেন, তার থেকে আলোটা আরো চারটে লোকের মধ্যে নিঃশব্দে ছড়িয়ে দিচ্ছেন কেউ জানে না। সমালোচনার আগে মনে মনে অন্ততঃ সেটির জন্য ধন্যবাদ স্বীকার করে তারপর বরং ফাটিয়ে সমালোচনা করুন।
আমার যেমন বিষয় অনেক আছে সমালোচনার। দেখে শুনে পছন্দ মত বেছে নিলেই হলো। তেমনি আপনারও এমন কিছু বিষয় আছে যা আপনি নিঃশব্দে নিঃস্বার্থ ভাবে করে যাচ্ছেন যা আমি জানি না বলে কেবল আমার পছন্দের বিষয়ে কেন কথা বলছেন না সে নিয়ে গলা ফাটিয়ে সমালোচনার ঝড় বইয়ে দিচ্ছি। অথচ দুজনেই নিজের নিজের বিষয়ে সিন্সিয়ারলি কাজ করছি কিন্তু। নইলে পৃথিবী এখনো আমাদের সহ্য করছে কি করে? অথচ দুজনেই ভাবছি আমি কেমন কাজের আর ও কেমন নিস্কর্মা, সুখী সুখী সখি টাইপ। আমি কেমন এই কদিনের মধ্যেই সমাজ বদলে ফেলবো পণ করেছি। আর ও কেবলই তাতে বাগড়া দিচ্ছে। আর 'সময়' এই ভেবেই আমোদ পাচ্ছে যে, "'বদল', সেতো আমার হাতে। কোনটা রাখবো কোনটা নয় সে এই দুই পালোয়ানের কেউই জানে না। অথচ দেখো কেমন গলা ফাটিয়ে বেকুবের মতন লড়াই করছে।"