#এই_সপ্তাহের_শেষে
৪. ওষুধ আবিষ্কার (পর্ব-৩)
--------------------------------
আচ্ছা, কোথায় ছিলাম যেন আমরা? হ্যাঁ, কলমিশাক ব্রেস্ট ক্যান্সার কমায় কিনা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে একজন বিজ্ঞানী প্রথমে পড়াশুনা করে এই আজব ধারণার আদৌ কোনো ভিত্তি আছে কিনা তা খুঁজেছেন, তারপর সরকারি সংস্থায় আবেদন করে গ্রান্ট জানিয়েছেন, তারপর সেই প্রকল্পে করা কাজ করবে সেইসব লোকজনকে জোগাড় করেছেন, তারপর ব্রেস্ট ক্যান্সারের কোষ জোগাড় করেছেন এবং শেষে চেনা রাসায়নিক বা অচেনা জৈব পদার্থ, এক্ষেত্রে কলমিশাকের নির্যাস (রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে বিভিন্ন অংশে ভাঙা) সেই কোষে প্রয়োগ করে কিছু আশাব্যঞ্জক ফলাফল পেয়েছেন। ইতিমধ্যে অন্তত পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। এইবার পরের গল্প বলি। পূর্ববর্তী অংশগুলিকে অনুসরণ করলে পরের গল্পটি দাঁড়ায় সাত নম্বর স্তরে। সেখান থেকেই শুরু করি তবে।
আচ্ছা, কোথায় ছিলাম যেন আমরা? হ্যাঁ, কলমিশাক ব্রেস্ট ক্যান্সার কমায় কিনা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে একজন বিজ্ঞানী প্রথমে পড়াশুনা করে এই আজব ধারণার আদৌ কোনো ভিত্তি আছে কিনা তা খুঁজেছেন, তারপর সরকারি সংস্থায় আবেদন করে গ্রান্ট জানিয়েছেন, তারপর সেই প্রকল্পে করা কাজ করবে সেইসব লোকজনকে জোগাড় করেছেন, তারপর ব্রেস্ট ক্যান্সারের কোষ জোগাড় করেছেন এবং শেষে চেনা রাসায়নিক বা অচেনা জৈব পদার্থ, এক্ষেত্রে কলমিশাকের নির্যাস (রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে বিভিন্ন অংশে ভাঙা) সেই কোষে প্রয়োগ করে কিছু আশাব্যঞ্জক ফলাফল পেয়েছেন। ইতিমধ্যে অন্তত পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। এইবার পরের গল্প বলি। পূর্ববর্তী অংশগুলিকে অনুসরণ করলে পরের গল্পটি দাঁড়ায় সাত নম্বর স্তরে। সেখান থেকেই শুরু করি তবে।
৭. কোষস্তরে (In vitro) আশাব্যঞ্জক ফলাফল পাবার পর এবার আপনি আর একটু এগোবেন। দেহের বাইরে আপনি চেষ্টা করেছেন কোষগুলিকে দেহের মত একটি পরিবেশ দেবার। কিন্তু দেহের ভেতরে আসল পরিবেশ এর থেকে অনেকটাই আলাদা। ক্যান্সার কোষগুলি আশেপাশের অন্য কোষের সাথে কিরকম ব্যবহার করে? কি তাদের আদানপ্রদান? দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই কোষগুলির ওপর কিরকম ব্যবহার করে? সেসবই প্রভাব ফেলবে ওই কম্পাউন্ডটির কার্যকারিতার ওপর। সুতরাং দেহের ভেতরে আপনার ওই কলমিশাক থেকে প্রাপ্ত কম্পাউন্ডটি বা কম্পাউন্ডগুলি একইরকম কাজ নাও করতে পারে। সুতরাং এবার আপনার চাই ব্রেস্ট ক্যান্সারওয়ালা একটি দেহ যেখানে আপনি এই কম্পাউন্ডগুলি প্রয়োগ করবেন। কোনো মানুষ নিশ্চয়ই নিজের দেহে আপনাকে আপনার এই সাধের কম্পাউন্ডটি প্রয়োগ করতে দেবে না। দেবে কি? সুতরাং আপনার চাই একটি অন্য প্রাণী যার দেহে আপনি ব্রেস্ট ক্যান্সার তৈরী করে তারপর ওই কম্পাউন্ডটি প্রয়োগ করবেন। নানা ধরণের বায়ো-মেডিক্যাল গবেষণার ক্ষেত্রে নানান ধরণের প্রাণী ব্যবহার করা হয়। প্রয়োজন মত। ছোট কেঁচো জাতীয় প্রাণী, সি এলিগেন্ট থেকে শুরু করে ড্রোসোফিলা নামের মাছি, বিভিন্ন রকম ইঁদুর- ছোট (mouse) এবং বড় ইঁদুর (rat), খরগোশ, গিনিপিগ, শূকর, কুকুর, নানা ধরণের বানর, শিম্পাঞ্জি, গরিলা সমস্ত কিছুকেই ব্যবহার করা হয়। আপনার এক্সপেরিমেন্টের ধরণের ওপর কোনধরনের প্রাণী ব্যবহার করা হবে তা নির্ভর করে। ক্যান্সার রিসার্চের কথাই যখন হচ্ছে তখন ছোট ইঁদুর (mouse) এর কথাই বলি। কারণ সবচাইতে বেশি এদেরই ব্যবহার করা হয়। আমায় অনেকেই জিজ্ঞাসা করেছেন আগে যে আমরা পরীক্ষার জন্য ইঁদুর কোথায় পাই? আরে না না মাঠে ঘাটে ইঁদুর ধরার ব্যাপার নয়। যেমন কোষ সাপ্লাই দেবার জন্য ATCC র মত সংস্থা আছে, তেমনি lab mice সাপ্লাই দেবার জন্য বেশ কয়েকটি কোম্পানি আছে। যারা বিভিন্ন বায়োলজিক্যাল বৈশিষ্ট্যযুক্ত ইঁদুর ব্রিড করে বয়স, লিঙ্গ এবং এক্সপেরিমেন্টের প্রয়োজন মত রিসার্চের জন্য সাপ্লাই করে। যেমন একটা হলো জ্যাকসন ল্যাবরেটরি। তাদের থেকে আপনি দরকার মতন ইঁদুর কিনে নিতে পারেন। নতুবা একটি male-female breeding pair কিনে তাদের থেকে বাচ্চা তৈরী করে নিতে পারেন আপনার এনিম্যাল ল্যাবরেটরিতে।সেটি অবশ্যই সময়সাপেক্ষ। নানা ধরণের ইঁদুর হয়। জীববিজ্ঞানসম্মত ভাবে তারা সবাই ইঁদুর গোত্রীয় হলেও বিশেষ পার্থক্য থাকে। আপনার প্রয়োজন মত কোনো একটি বিশেষ জিনের কার্যকারিতা দেখার জন্য সেই জিনবিহীন বা সেই জিন বেশি করে কাজ করবে এমন ইঁদুর নিয়েও আপনি কাজ করতে পারেন। কিন্তু সেসব পরের ধাপের গল্প। সেসব গল্প প্রয়োজন মতন বলা যাবেখন। আপাতত এটুকু বলি যে, ইঁদুর কিনে বা ইঁদুরের মা-বাবাকে কিনে, তাদের থেকে বাচ্চা পাড়িয়ে আপনার প্রয়োজন মত আপনি ইঁদুর জোগাড় করতে পারেন। কিন্তু এর আগে একটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ধাপ আছে। সেটি হলো, ইঁদুর (বা যেকোনো ধরণের প্রাণী) নিয়ে গবেষণা করার অনুমতি জোগাড় করা।
আপনি যেমন খুশি, যতগুলো খুশি ইঁদুর নিলেন আর তাদের ওপর যা খুশি তাই পরীক্ষা করলেন সেটি হচ্ছে না। ওরা ইঁদুর বলে কি আপনার মানবতা নেই নাকি?
প্রতিটা ইনস্টিটিউট বা ইউনিভার্সিটি যেখানে আপনি রিসার্চ করছেন, সেখানে একটি ইন্টারনাল কমিটি থাকে। যেখানে অন্য বিজ্ঞানী, আইনজীবীরা থাকেন। 'ইঁদুরে (বা অন্য প্রাণীতে) কাজ শুরু করব'- একথা মনে হলেই আপনাকে একটি আবেদনপত্র পাঠাতে হবে এই কমিটিতে। সেই আবেদন পত্রে আপনাকে স্পষ্ট করে জানাতে হবে কেন ইঁদুরে কাজ করা আপনার প্রয়োজন? এক্কেবারে সঠিক ভাবে কতগুলি ইঁদুর আপনার লাগবে বছরে এই কাজ করতে গেলে সেই সংখ্যাটি আপনাকে জানাতে হবে। গ্রান্ট লেখার সময় যদি আপনি ইঁদুরে কাজ করবার প্রস্তাব করে থাকেন, তখনও আপনাকে নির্দিষ্ট করে এই সংখ্যাটির উল্লেখ করতে হবে। আপনার এক্সপেরিমেন্টের প্রয়োজন অনুসারে এই সংখ্যাটি নির্ণয় করতে হবে সংখ্যাতত্ত্বের অঙ্ক কষে। এই পর্বে আপনার একজন স্ট্যাটিস্টিশিয়ানের সাহায্য নিতে হতে পারে। কারণ, এই সংখ্যার কম ইঁদুর নিয়ে পরীক্ষা করে পাওয়া কোনো ফলাফলের statistical significance থাকবে না ফলে এতদিন ধরে করা আপনার সাধের গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের পরবর্তী ক্ষেত্রে ধ্রুবত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা কমবে। বাতিলও হয়ে যেতে পারে। আর এই সংখ্যাটা পার হয়ে বেশি প্রাণী নিয়ে আপনি গবেষণা করছেন মানে আপনি প্রয়োজনের বেশি প্রাণীহত্যা করছেন। সেটি আপনি করতে পারেন না। সুতরাং এই সংখ্যাটি পার হয়ে যাওয়াটা আপনার পক্ষে মঙ্গলজনক নয়। আবার কম হলেও পরীক্ষার ফলাফল সম্পর্কে সন্দেহ থেকে যায়। ইঁদুর কেনার সময় থেকেই আপনি নজরবন্দি। কটা কিনছেন তার হিসেবে ইনস্টিটিউটের কমিটির কাছে থাকবে। আর ব্রিডিং করিয়ে নেব ভাবলে, আনিম্যাল হাউসিং ফেসিলিটি, মানে যেখানে আপনি ইঁদুরগুলোকে রাখবেন এবং পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন সেই এলাকাতে আপনার ইঁদুরের খাঁচাগুলিকে নজর দেবার জন্য অনেক লোক আছে। তারা এনিম্যাল হাউসের কর্মী। সুতরাং গন্ডগোল নাস্তি।
যাই হোক, যা বলছিলাম, তো সেই ইন্টারন্যাল কমিটিতে আপনাকে এটাও জানাতে হবে আপনি ঠিক কি কি করবেন ইঁদুরদের ওপরে। কোনো রকম পদ্ধতিতে যদি নিষ্ঠুরতা থাকে তবে আপনার আবেদনপত্র থেকে সেই পদ্ধতিটি বাদ দিতে হবে। পরীক্ষা শেষে ইঁদুরদের মারার প্রক্রিয়াতেও আগে তাদের অজ্ঞান করে তারপর তাদের মারতে হবে যাতে যন্ত্রণাদায়ক না হয়। এই পদ্ধতিগুলির নির্দিষ্ট নিয়ম আছে যা ওই কমিটি দ্বারা কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। ইন্টারনাল কমিটির ওপরে স্টেট্ এবং ন্যাশন্যাল কমিটি আছে। তারা নির্দিষ্ট সময় অন্তর আপনার সাধারণ ল্যাব এবং এনিম্যাল ল্যাব ভিসিট করবে। সমস্ত নিয়ম, প্রটোকল মেনে চলা হচ্ছে কিনা খুঁটিয়ে দেখবে। কিছুমাত্র এদিক ওদিক হলেই গন্ডগোল, বিস্তর গন্ডগোল। এমন বহু বহু উদাহরণ আছে যেখানে এই প্রোটকল বা নিয়ম থেকে বিচ্যুতির জন্য সেই বিজ্ঞানীর এনিম্যাল নিয়ে কাজ করা সাময়িক বা বহুকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আমায় একজন উচ্চশিক্ষিত মানুষ কোনো এক কম্পাউন্ডের প্রসঙ্গে বলেছিলেন, "আরে কটা ইঁদুরে পটাপট মেরে দিয়ে (ইনজেক্ট করে) দেখ না কি হয়।" যদিও তিনি রিসার্চার নন, তার নিয়ম জানার কথাও নয় তবুও বলি- না, "দেখিই না কি হয়" বলে ওরকম ভাবে কোনো প্রাণীতে পটাপট কিছু ইনজেক্ট করে দেওয়া যায় না। আমাদের সে ক্ষমতা আছে বলেই সে ক্ষমতা প্রয়োগ না করার জন্য এত কঠোর নিয়ম আছে। আর সেটা সুষ্ঠ ভাবে মেনে চলাটাই এনিম্যাল এক্সপেরিমেন্টের নৈতিকতা।
যাই হোক এবার এই এনিম্যাল প্রটোকল লিখে, কমিটির রিভিউয়ারদের থেকে সম্মতি নিয়ে, ইঁদুর কিনলেন বা ইঁদুরের মা বাবাকে কিনে বাচ্চা তৈরী করে নিলেন। মোটকথা কাজ শুরু করলেন। এবার তার দেহে ক্যান্সার তৈরী করতে হবে। কি করে করবেন? এক, তাদের দেহে ক্যান্সারের কোষ ঢুকিয়ে আর দুই তাদের শরীরে এমন কিছু জিনগত পরিবর্তন করে যাতে তাদের দেহে নিজে থেকেই ক্যান্সার তৈরী হয়। প্রথম পদ্ধতিতে সময় কিঞ্চিৎ কম লাগে কারণ যেখানে আপনার ক্যান্সার দরকার সেখানে সেই ক্যান্সার কোষই আপনি সরাসরি ইঞ্জেক্ট করছেন। সুতরাং সব কিছু ঠিক থাকে থাকলে কয়েক সপ্তাহেই সেই অঙ্গে টিউমার তৈরী হবে। এক্ষেত্রে ইঁদুরের দেহে ইঁদুরের ক্যান্সার কোষ ঢোকাতে হবে।কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ব্যাপারটা খানিক সময়সাপেক্ষ (অবশ্য কোন অঙ্গে বা কোন জিনের পরিবর্তনে আপনি ক্যান্সার তৈরী করছেন তার ওপর নির্ভর করবে সময়ের পরিমাপ)।
প্রথম ক্ষেত্রে একটা সমস্যা আছে, মানুষের ক্যান্সার নিয়ে আপনি কাজ করছেন, জানতে চাইবেনই মানুষের ক্যান্সার কোষগুলি প্রাণীদেহে কেমন ভাবে বাড়ে আপনার ওই কম্পাউন্ডটি প্রয়োগের পর। তাইতো? এখন, ইঁদুরের দেহে আপনি মানুষের ক্যান্সারের কোষ ঢোকালে ইঁদুরের দেহ তাকে নিজের শরীরে বাঁচতে দেবে কেন? অন্য প্রজাতির কোষ দেখলেই তো ঠেলে বের করে দেবে, মানে শরীরের প্রতিরোধশক্তি (immune system) কার্যকরী হয়ে মানুষের ক্যান্সার কোষগুলিকে মেরে ফেলবে। যেমন ভাবে লক্ষ ব্যাকটেরিয়ার সমুদ্রে বাস করেও আমাদের সবসময় শরীর খারাপ হয়না ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের জন্য। তাহলে মানুষের ক্যান্সার কোষ দিয়ে ইঁদুরের শরীরে ক্যান্সার তৈরী হবে কি করে?
হবে। তারও উপায় আছে। ইঁদুরের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিয়ে তারপর তার দেহে মানুষের ক্যান্সারের কোষ ঢুকিয়ে টিউমার তৈরী করতে হবে। এই যে বললাম, 'ইঁদুরের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিয়ে', এই কথাটির ঠিকঠাক মানে হলো, যে ধরণের শ্বেতরক্তকণিকা আমাদের শরীরে বাইরের কোনো কোষ দেখলে চিনতে পারে এবং তারপর মেরে ফেলে, বা গিলে খেয়ে ফেলে সেই ধরণের প্রতিরোধক কোষ এবং তাদের সমস্ত সহায়ক কোষগুলিকে তৈরী হতে না দেওয়া। ভ্রূণাবস্থা থেকেই ইঁদুরগুলিকে সেইভাবে তৈরী করা হয়। এদের বলে Athymic mice. কেন athymic? কারণ আমাদের শরীরে ওই ধরণের শ্বেত রক্তকণিকা (T lymphocyte) তৈরী করে থাইমাস গ্রন্থি। এই ধরণের ইঁদুরদের এই গ্রন্থিটি কার্যকরী নয়। থাইমাস নেই তাই athymic। এদের দেহে আবার লোম টোম কিচ্ছু গজায় না। গোঁফটি থাকে যদিও দিব্যি। তাই এদের আবার nude mice বলেও ডাকা হয়। এদেরও আপনি কোম্পানি থেকে সোজা কিনে নিতে পারেন। যাই হোক এদের দেহে যেহেতু প্রতিরোধ ক্ষমতাটি প্রায় নেই, তাই মানুষের ক্যান্সার কোষ এদের দেহে ঢোকালেও তাকে বিজাতীয় বলে চিনতে পারবে না ইঁদুরের দেহ। সুতরাং দিব্যি টিউমার তৈরী হবে। তবে অন্য ইনফেকশন হবার সম্ভাবনা এদের বেশি। তাই খাঁচা পরিষ্কার রাখা ইত্যাদির ওপর জোর দিতে হবে।
তা সে যেভাবেই হোক না কেন, আপনি ইঁদুরের শরীরে ক্যান্সার তৈরী করলেন। এবার একটি নির্দিষ্ট সময়ে আপনাকে আপনার তৈরী সমস্ত ইঁদুরগুলি থেকে আপনাকে বেছে নিতে হবে কেবল তাদেরই যাদের কিনা টিউমারের সাইজ একই। কোষ ঢুকিয়ে টিউমার তৈরী করতে গেলে তাই সবকটা ইঁদুরে সমসংখ্যক কোষ ইনজেক্ট করতে হয়। অর্থাৎ কিনা আপনি যখন আপনার কম্পাউন্ডটি প্রয়োগ করতে শুরু করবেন তখন ভাগ্যক্রমে আপনি ছোট বা বড় টিউমার নিয়ে শুরু করেছেন তাই এমন ফল পেয়েছেন এমন কথা না ওঠে। টিউমার বাইরে থেকে ছবি তোলার নানান পদ্ধতি আছে যেমন মানুষের হয় আর কি। CT scan, MRI ছাড়াও আরো কিছু পদ্ধতি আছে যেখানে ক্যান্সার কোষগুলিকে ইঁদুরের দেহে ঢোকানোর আগেই তাদের এমন ভাবে বদলে দেওয়া যেতে পারে যাতে তারা বাইরে থেকে ছবি তোলার উপযুক্ত একটি প্রোটিন তৈরী করে। ফলে পরে আপনি যখন ছবি তুলবেন তখন টিউমারটি দিব্যি জ্বলজ্বল করবে ছবিতে। এই নিচে একটা ছবি দিচ্ছি দেখুন। এবার তাদের মেপে নিলেই হলো। যাইহোক, ইঁদুরগুলিকে এমন ভাবে দুটি ভাগে ভাগ করতে হবে যাতে দুটি ভাগের টিউমার সাইজের কোনো বিশেষ পার্থক্য না থাকে। এবার একটি দলে আপনি আপনার কম্পাউন্ডটি প্রয়োগ করলেন। কতটা পরিমাণে, সপ্তাহে কতগুলি ডোজে এসব আপনাকে বার বার করে করে বুঝে নিতে হবে। নতুবা আপনার আগে কেউ একই ক্যান্সারে ওই একই কম্পাউন্ড নিয়ে ইঁদুরে প্রয়োগ করে থাকলে তার প্রকাশিত গবেষণাপত্র থেকে আপনাকে আন্দাজ করতে হবে। আর অন্য ভাগে আপনি ওই কম্পাউন্ডটি যে দ্রাবকে গোলা সেই দ্রাবকটি সমপরিমানে ইনজেক্ট করতে হবে। যাতে এটি নিশ্চিত হয় যে কেবলমাত্র আপনার ওই কম্পাউন্ডটিই টিউমারের কমা বা বাড়ার জন্য দায়ী। দ্রবনের অন্য আর কিছু নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই পরিমান আর দেবার সময় ভীষণ ভীষণ ক্রিটিক্যাল থাকে। ওই ট্রায়াল এন্ড এরর মেথডে সেই ক্রিটিক্যাল স্তরে পৌঁছাতেই বছর দুয়েক লেগে যায়। তারপর শুরু হয় আসল পরীক্ষা। এই বার আপনি বেশ কয়েকসপ্তাহ পরীক্ষা করে তারপর আবার বাইরে থেকে ছবি তুলে টিউমারগুলির অবস্থা দেখে নিতে পারেন বা ইঁদুরগুলির দেহ থেকে টিউমার বের করে নিয়ে তাদের সাইজ, ওজন মেপে দেখতে পারেন টিউমার কমছে কিনা। অনেকসময় ও দেখা যায় যে, টিউমার সাইজ না কমলেও ক্যান্সারের ছড়িয়ে যাওয়া (metastasis) কমছে। সেটিও বড়োই কার্যকরী বিষয়।
এবার এই একই পরীক্ষা আপনাকে বার বার করে দেখতে হবে। নির্দিষ্ট সংখ্যার ইঁদুরে করে স্টাটিস্টিক্যাল সিগ্নিফিকেন্স অবধি পৌঁছাতে হবে। তারপর আপনি ভাববেন আচ্ছা তাহলে কোষস্তরে শুধু নয়, প্রাণীদেহেও কম্পাউন্ডটি কাজ করছে। দাঁড়ান দাঁড়ান, এখনো এই কম্পাউন্ডটিকে আমরা ওষুধ বলতে পারিনা। এখনো অনেক কাজ বাকি। এবার আপনাকে আপনার কোষস্তর (in vitro) এবং প্রাণীদেহের (in vivo) পরীক্ষার পদ্ধতিগত খুঁটিনাটি এবং তার থেকে প্রাপ্ত সমস্ত ফলাফল গবেষণা পত্রের আকারে লিখে বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় (জার্নালে) প্রকাশ করতে হবে। কোনো ভুল থেকে থাকলে তাঁরা প্রকাশের আগে জার্নালের রিভিউ বোর্ডে থাকা বিজ্ঞানীরা তা খুঁটিয়ে দেখে ভুল সংশোধন করে তবেই তা প্রকাশ হবে। সেটি তখন পৃথিবীর সমস্ত বিজ্ঞানী মহলে উন্মুক্ত। তারপর অন্তত দশ বছর লাগে এই অবস্থা থেকে মানুষে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হতে। কেন? সে গল্প পরের দিনে বলি বরং। আজ এপর্যন্তই থাক। পরের দিন বলব ইঁদুর থেকে মানুষে প্রয়োগ শুরু হবার মাঝের সংগ্রামের কথা।
ভাল থাকবেন সবাই।
আজ আসি।
অর্পিতা
যাই হোক, যা বলছিলাম, তো সেই ইন্টারন্যাল কমিটিতে আপনাকে এটাও জানাতে হবে আপনি ঠিক কি কি করবেন ইঁদুরদের ওপরে। কোনো রকম পদ্ধতিতে যদি নিষ্ঠুরতা থাকে তবে আপনার আবেদনপত্র থেকে সেই পদ্ধতিটি বাদ দিতে হবে। পরীক্ষা শেষে ইঁদুরদের মারার প্রক্রিয়াতেও আগে তাদের অজ্ঞান করে তারপর তাদের মারতে হবে যাতে যন্ত্রণাদায়ক না হয়। এই পদ্ধতিগুলির নির্দিষ্ট নিয়ম আছে যা ওই কমিটি দ্বারা কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। ইন্টারনাল কমিটির ওপরে স্টেট্ এবং ন্যাশন্যাল কমিটি আছে। তারা নির্দিষ্ট সময় অন্তর আপনার সাধারণ ল্যাব এবং এনিম্যাল ল্যাব ভিসিট করবে। সমস্ত নিয়ম, প্রটোকল মেনে চলা হচ্ছে কিনা খুঁটিয়ে দেখবে। কিছুমাত্র এদিক ওদিক হলেই গন্ডগোল, বিস্তর গন্ডগোল। এমন বহু বহু উদাহরণ আছে যেখানে এই প্রোটকল বা নিয়ম থেকে বিচ্যুতির জন্য সেই বিজ্ঞানীর এনিম্যাল নিয়ে কাজ করা সাময়িক বা বহুকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আমায় একজন উচ্চশিক্ষিত মানুষ কোনো এক কম্পাউন্ডের প্রসঙ্গে বলেছিলেন, "আরে কটা ইঁদুরে পটাপট মেরে দিয়ে (ইনজেক্ট করে) দেখ না কি হয়।" যদিও তিনি রিসার্চার নন, তার নিয়ম জানার কথাও নয় তবুও বলি- না, "দেখিই না কি হয়" বলে ওরকম ভাবে কোনো প্রাণীতে পটাপট কিছু ইনজেক্ট করে দেওয়া যায় না। আমাদের সে ক্ষমতা আছে বলেই সে ক্ষমতা প্রয়োগ না করার জন্য এত কঠোর নিয়ম আছে। আর সেটা সুষ্ঠ ভাবে মেনে চলাটাই এনিম্যাল এক্সপেরিমেন্টের নৈতিকতা।
যাই হোক এবার এই এনিম্যাল প্রটোকল লিখে, কমিটির রিভিউয়ারদের থেকে সম্মতি নিয়ে, ইঁদুর কিনলেন বা ইঁদুরের মা বাবাকে কিনে বাচ্চা তৈরী করে নিলেন। মোটকথা কাজ শুরু করলেন। এবার তার দেহে ক্যান্সার তৈরী করতে হবে। কি করে করবেন? এক, তাদের দেহে ক্যান্সারের কোষ ঢুকিয়ে আর দুই তাদের শরীরে এমন কিছু জিনগত পরিবর্তন করে যাতে তাদের দেহে নিজে থেকেই ক্যান্সার তৈরী হয়। প্রথম পদ্ধতিতে সময় কিঞ্চিৎ কম লাগে কারণ যেখানে আপনার ক্যান্সার দরকার সেখানে সেই ক্যান্সার কোষই আপনি সরাসরি ইঞ্জেক্ট করছেন। সুতরাং সব কিছু ঠিক থাকে থাকলে কয়েক সপ্তাহেই সেই অঙ্গে টিউমার তৈরী হবে। এক্ষেত্রে ইঁদুরের দেহে ইঁদুরের ক্যান্সার কোষ ঢোকাতে হবে।কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ব্যাপারটা খানিক সময়সাপেক্ষ (অবশ্য কোন অঙ্গে বা কোন জিনের পরিবর্তনে আপনি ক্যান্সার তৈরী করছেন তার ওপর নির্ভর করবে সময়ের পরিমাপ)।
প্রথম ক্ষেত্রে একটা সমস্যা আছে, মানুষের ক্যান্সার নিয়ে আপনি কাজ করছেন, জানতে চাইবেনই মানুষের ক্যান্সার কোষগুলি প্রাণীদেহে কেমন ভাবে বাড়ে আপনার ওই কম্পাউন্ডটি প্রয়োগের পর। তাইতো? এখন, ইঁদুরের দেহে আপনি মানুষের ক্যান্সারের কোষ ঢোকালে ইঁদুরের দেহ তাকে নিজের শরীরে বাঁচতে দেবে কেন? অন্য প্রজাতির কোষ দেখলেই তো ঠেলে বের করে দেবে, মানে শরীরের প্রতিরোধশক্তি (immune system) কার্যকরী হয়ে মানুষের ক্যান্সার কোষগুলিকে মেরে ফেলবে। যেমন ভাবে লক্ষ ব্যাকটেরিয়ার সমুদ্রে বাস করেও আমাদের সবসময় শরীর খারাপ হয়না ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের জন্য। তাহলে মানুষের ক্যান্সার কোষ দিয়ে ইঁদুরের শরীরে ক্যান্সার তৈরী হবে কি করে?
হবে। তারও উপায় আছে। ইঁদুরের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিয়ে তারপর তার দেহে মানুষের ক্যান্সারের কোষ ঢুকিয়ে টিউমার তৈরী করতে হবে। এই যে বললাম, 'ইঁদুরের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিয়ে', এই কথাটির ঠিকঠাক মানে হলো, যে ধরণের শ্বেতরক্তকণিকা আমাদের শরীরে বাইরের কোনো কোষ দেখলে চিনতে পারে এবং তারপর মেরে ফেলে, বা গিলে খেয়ে ফেলে সেই ধরণের প্রতিরোধক কোষ এবং তাদের সমস্ত সহায়ক কোষগুলিকে তৈরী হতে না দেওয়া। ভ্রূণাবস্থা থেকেই ইঁদুরগুলিকে সেইভাবে তৈরী করা হয়। এদের বলে Athymic mice. কেন athymic? কারণ আমাদের শরীরে ওই ধরণের শ্বেত রক্তকণিকা (T lymphocyte) তৈরী করে থাইমাস গ্রন্থি। এই ধরণের ইঁদুরদের এই গ্রন্থিটি কার্যকরী নয়। থাইমাস নেই তাই athymic। এদের দেহে আবার লোম টোম কিচ্ছু গজায় না। গোঁফটি থাকে যদিও দিব্যি। তাই এদের আবার nude mice বলেও ডাকা হয়। এদেরও আপনি কোম্পানি থেকে সোজা কিনে নিতে পারেন। যাই হোক এদের দেহে যেহেতু প্রতিরোধ ক্ষমতাটি প্রায় নেই, তাই মানুষের ক্যান্সার কোষ এদের দেহে ঢোকালেও তাকে বিজাতীয় বলে চিনতে পারবে না ইঁদুরের দেহ। সুতরাং দিব্যি টিউমার তৈরী হবে। তবে অন্য ইনফেকশন হবার সম্ভাবনা এদের বেশি। তাই খাঁচা পরিষ্কার রাখা ইত্যাদির ওপর জোর দিতে হবে।
তা সে যেভাবেই হোক না কেন, আপনি ইঁদুরের শরীরে ক্যান্সার তৈরী করলেন। এবার একটি নির্দিষ্ট সময়ে আপনাকে আপনার তৈরী সমস্ত ইঁদুরগুলি থেকে আপনাকে বেছে নিতে হবে কেবল তাদেরই যাদের কিনা টিউমারের সাইজ একই। কোষ ঢুকিয়ে টিউমার তৈরী করতে গেলে তাই সবকটা ইঁদুরে সমসংখ্যক কোষ ইনজেক্ট করতে হয়। অর্থাৎ কিনা আপনি যখন আপনার কম্পাউন্ডটি প্রয়োগ করতে শুরু করবেন তখন ভাগ্যক্রমে আপনি ছোট বা বড় টিউমার নিয়ে শুরু করেছেন তাই এমন ফল পেয়েছেন এমন কথা না ওঠে। টিউমার বাইরে থেকে ছবি তোলার নানান পদ্ধতি আছে যেমন মানুষের হয় আর কি। CT scan, MRI ছাড়াও আরো কিছু পদ্ধতি আছে যেখানে ক্যান্সার কোষগুলিকে ইঁদুরের দেহে ঢোকানোর আগেই তাদের এমন ভাবে বদলে দেওয়া যেতে পারে যাতে তারা বাইরে থেকে ছবি তোলার উপযুক্ত একটি প্রোটিন তৈরী করে। ফলে পরে আপনি যখন ছবি তুলবেন তখন টিউমারটি দিব্যি জ্বলজ্বল করবে ছবিতে। এই নিচে একটা ছবি দিচ্ছি দেখুন। এবার তাদের মেপে নিলেই হলো। যাইহোক, ইঁদুরগুলিকে এমন ভাবে দুটি ভাগে ভাগ করতে হবে যাতে দুটি ভাগের টিউমার সাইজের কোনো বিশেষ পার্থক্য না থাকে। এবার একটি দলে আপনি আপনার কম্পাউন্ডটি প্রয়োগ করলেন। কতটা পরিমাণে, সপ্তাহে কতগুলি ডোজে এসব আপনাকে বার বার করে করে বুঝে নিতে হবে। নতুবা আপনার আগে কেউ একই ক্যান্সারে ওই একই কম্পাউন্ড নিয়ে ইঁদুরে প্রয়োগ করে থাকলে তার প্রকাশিত গবেষণাপত্র থেকে আপনাকে আন্দাজ করতে হবে। আর অন্য ভাগে আপনি ওই কম্পাউন্ডটি যে দ্রাবকে গোলা সেই দ্রাবকটি সমপরিমানে ইনজেক্ট করতে হবে। যাতে এটি নিশ্চিত হয় যে কেবলমাত্র আপনার ওই কম্পাউন্ডটিই টিউমারের কমা বা বাড়ার জন্য দায়ী। দ্রবনের অন্য আর কিছু নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই পরিমান আর দেবার সময় ভীষণ ভীষণ ক্রিটিক্যাল থাকে। ওই ট্রায়াল এন্ড এরর মেথডে সেই ক্রিটিক্যাল স্তরে পৌঁছাতেই বছর দুয়েক লেগে যায়। তারপর শুরু হয় আসল পরীক্ষা। এই বার আপনি বেশ কয়েকসপ্তাহ পরীক্ষা করে তারপর আবার বাইরে থেকে ছবি তুলে টিউমারগুলির অবস্থা দেখে নিতে পারেন বা ইঁদুরগুলির দেহ থেকে টিউমার বের করে নিয়ে তাদের সাইজ, ওজন মেপে দেখতে পারেন টিউমার কমছে কিনা। অনেকসময় ও দেখা যায় যে, টিউমার সাইজ না কমলেও ক্যান্সারের ছড়িয়ে যাওয়া (metastasis) কমছে। সেটিও বড়োই কার্যকরী বিষয়।
এবার এই একই পরীক্ষা আপনাকে বার বার করে দেখতে হবে। নির্দিষ্ট সংখ্যার ইঁদুরে করে স্টাটিস্টিক্যাল সিগ্নিফিকেন্স অবধি পৌঁছাতে হবে। তারপর আপনি ভাববেন আচ্ছা তাহলে কোষস্তরে শুধু নয়, প্রাণীদেহেও কম্পাউন্ডটি কাজ করছে। দাঁড়ান দাঁড়ান, এখনো এই কম্পাউন্ডটিকে আমরা ওষুধ বলতে পারিনা। এখনো অনেক কাজ বাকি। এবার আপনাকে আপনার কোষস্তর (in vitro) এবং প্রাণীদেহের (in vivo) পরীক্ষার পদ্ধতিগত খুঁটিনাটি এবং তার থেকে প্রাপ্ত সমস্ত ফলাফল গবেষণা পত্রের আকারে লিখে বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় (জার্নালে) প্রকাশ করতে হবে। কোনো ভুল থেকে থাকলে তাঁরা প্রকাশের আগে জার্নালের রিভিউ বোর্ডে থাকা বিজ্ঞানীরা তা খুঁটিয়ে দেখে ভুল সংশোধন করে তবেই তা প্রকাশ হবে। সেটি তখন পৃথিবীর সমস্ত বিজ্ঞানী মহলে উন্মুক্ত। তারপর অন্তত দশ বছর লাগে এই অবস্থা থেকে মানুষে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হতে। কেন? সে গল্প পরের দিনে বলি বরং। আজ এপর্যন্তই থাক। পরের দিন বলব ইঁদুর থেকে মানুষে প্রয়োগ শুরু হবার মাঝের সংগ্রামের কথা।
ভাল থাকবেন সবাই।
আজ আসি।
অর্পিতা