মহাষষ্ঠীর দিন শুনেছি মা দুগ্গার ঘুম ভাঙানো হয়। ঐদিনই তিনি নাকি তিনি চোখ কচলে উঠে বসে-আড়মোড়া ভেঙ্গে-দাঁত মুখ মেজে-এককাপ দুর্দান্ত দার্জিলিং চা খেয়ে সিংহীটাকে 'চলরে, বাঁদরটাকে খানিক টাইট করে আসি' বলে বেরিয়েছিলেন। তারপরতো 'কি যুদ্ধু..........কি যুদ্ধু!!!! বাপরে! মানে টিভিতে 'মহিষাসুরমর্দিনী' বলে মহালয়ার দিনে যা নাচন-কোঁদন দেখানো হত আর আমি সাত সকালে উঠে একগ্লাস দুধ আর দুটো-মারী বিস্কুট নিয়ে হাঁ আ আ আ করে যা গিলতাম আর কি। তারপর সে ব্যাটা দুষ্টু মহিষ তো লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে ঢাল-তলোয়ার নিয়ে বেশ খানিকটা তেজ দেখাতো। শেষকালে মা দুগ্গার ত্রিশুলের খোঁচা আর সিংহের থাবার চড়-থাপ্পড় খেয়ে দুগ্গামায়ের পায়ের তলায় দাঁত ছড়কুটে পড়ত। তবেই ধরাধামে শান্তি। তদ্দিনে অবশ্য শাস্ত্রমতে ষষ্ঠী-সপ্তমী-অষ্টমী পেরিয়ে নবমী আসবো-আসবো করছে। মোদ্দা কথা এই যে সময়টা চলছে তাতে মা দুগ্গার ত্রিশুলের খোঁচায় সমস্ত মহিষের মুখোশধারী চোর-ছ্যাঁচড়-ডাকাত-জনগণের তহবিল তছরূপকারী-খুনি-ধর্ষক ইত্যাদি ইত্যাদি যাবতীয় আপদ বিদেয় হবার কথা।
এদ্দিন মনে হচ্ছিল বুঝি সত্যযুগের মত তেত্রিশ কোটি দেবদেবী আর দুশো কোটি হাভাতে জনগণের সমবেত চিত্কার-চেঁচামেচি ছাড়া মা-দুগ্গার ঘুমও আর ভাঙবে না। অসুরদমনও আর হবে না। মহিষাসুরের তাড়া খেয়ে যেমন দেবতারা কোঁচা সামলে হৃত্পিণ্ড হাতে করে উর্দ্ধশ্বাসে দৌড়াচ্ছিলেন তেমনি আমাদেরও মরতে মরতে দৌড়াতে হবে মোষের শিং-এর খোঁচা থেকে বাঁচতে। এই করতে গিয়ে কিছুদিন আগে পর্যন্ত মনে হচ্ছিল বুঝি মরেই গেছি। আর কোনো মাদুগ্গার ক্ষমতা নেই এই আগাছা পরিষ্কার করার। অসুর ব্যাটারা ঝাড়ে-বংশে এক্সপোনেনশিয়াল রেট-এ বেড়ে বাকিদের ঝাড়ে-বংশে নির্মূল করলো বলে।
কিন্তু ইদানিং কালের পরপর কয়েকটা ঘটনায় মনে হচ্ছে নাহ, বোধহয় এখনো বেঁচেই আছি। এবং আরো কিছুদিন বোধহয় বেঁচে থাকতে পারব। মা দুগ্গা যে নিজে না আসলেও দূর থেকে বেশ কিছু চ্যালা-চামুন্ডা তৈরী করে চলেছিলেন সেটা এবার বেশ বুঝতে পারছি। চ্যালারাই এখন ভরসা। মা দুগ্গার চ্যালা বলে কথা এ কি আর সোজা কথা? এই যেমন ধরুন না কেন মহিষদলের অন্যায়ভাবে ঢুঁশো মারার প্রতিবাদে মা দুগ্গার হাজার-হাজার পুঁচকে চ্যালার দল নিজেদের ডিগ্রী-সার্টিফিকেট-রেকমেন্ডেশন-বিদেশযাত্রা-গবেষনার তোয়াক্কা না করে এই যে সারা দেশ জুড়ে নিজেদের পাঠশালার হেড-পন্ডিতের এবং তত্সহ মহারানীর সংসারের রাঘব-বোয়াল গোছের মাতব্বরদের ঝুঁটি ধরে এমন টানটাই দিল যে ঝুঁটি খুলে আসার উপক্রম প্রায়। ঝুঁটি বাঁচাতে বড়-বড় মহিষদের এখন মা দুগ্গার পায়ের তলায় বসে 'ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি'-গোছের অবস্থা। এতে করে একটা জিনিস পরিষ্কার যে, নিজেরটুকুনি কোলে আঁকড়ে বসে না থেকে, নিজের এবং বাকি সকলের কেবলমাত্র সুস্থভাবে বেঁচে থাকাটুকু সুনিশ্চিত করতে পথে নামার লোক এখনও আছে। তারা কেউ পরবর্তী নির্বাচনের সম্ভব্য প্রার্থী নয় যে 'আমি সত্য পথে জনগণের সাথে আছি' বোঝাতে পথে নেমেছে। দস্তুরমতন পেন-খাতা-পরীক্ষা-গবেষণা ছেড়ে নেমেছে। মনে খানিক বল পেলাম এই চ্যালাদের দেখে। তাহলে এখনো সব ফুরিয়ে যায়নি কি বলেন? এখনো কেরিয়ার কে পাশে রেখে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা যায়!
তারপরে ধরুন দেশের উত্তরতম প্রান্তে বরুনদেবের বাঁধনছেঁড়া খেয়ালিপনায় বন্যা-টন্যা হয়ে একশা কান্ড। বাড়িঘর ভেঙ্গে-রাস্তা, টেলিফোন ব্যবস্থা ধুয়ে মুছে সাফ। খাবার জল বিষিয়ে গেছে। হাসপাতালের দেওয়াল ভেঙ্গে রোগীর বিছানাসমেত ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে জলের তোড়। শিশুখাদ্য-খাবার জল-ওষুধপত্র এই নূন্যতম জিনিসপত্রের যোগান পর্যন্ত নেই। এসব দৃশ্য তো টিভি খবরের কাগজের দৌলতে কারো আর অজানা নয়। আমরা প্রত্যেকেই সন্ধ্যেবেলা বাড়ি ফিরে চা-কফি আর ভালোমন্দ স্ন্যাকস খেতে খেতে 'ইশ কি অবস্থা ওখানে' বলে সেসব দেখছি আর তারপরেই চ্যানেল বা ওয়েবসাইট বদলে আমাদের পছন্দের চ্যানেল বা অনলাইন শপিং সাইটে চলে গেছি। আরো কয়েকমিনিট একটু বেশি খরচ করা যেতে পারে সেটা ভেবেও দেখিনি। অথচ, মাদুগ্গারই আরো একদল চ্যালা, এরাও কিন্তু জীবনের প্রথম পর্বে দাঁড়িয়ে আছে। জীবন-প্রেম-জীবিকা-ডিগ্রী-পরীক্ষা-বিদেশ যাত্রা এসব নিয়েই ব্যস্ত থাকতে পারত। হয়ত আছেও। কিন্তু মাদুগ্গার চ্যালা কিনা, তাই আমাদের চেয়ে জীবন, সময় সবকিছুরই যথার্থ ব্যবহারটা জানে। তারা কিনা নিজেদের মধ্যে-বন্ধুবান্ধব মধ্যে-তাদের বন্ধুবান্ধব-নিজেদের ইউনিভার্সিটি-বন্ধুদের ইউনিভার্সিটি-রিসার্চ ইনস্টিটিউট সব জায়গা থেকে সকলের কাছে আবেদন করে টাকা পয়সা জড়ো করলো। পুরো দিল্লি চত্ত্বরে কম ইউনিভার্সিটি-ইনস্টিটিউট নেই। সেই ঢেউ বন্ধু-তার বন্ধু-তার বন্ধু পরিবাহিত হয়ে আমাদের এই অজগাঁয়ের ইনস্টিটিউটেও এসে পৌঁছালো। প্রত্যেকেই নিজেদের সাধ্যমতো টাকাপয়সা দিল। এখান থেকে সেই টাকাপয়সা দিল্লির পাঁচমাথার মোড়ে গিয়ে জমা হলো। সেই টাকায় খাবারদাবার-পানীয় জল-ওষুধপত্র-শিশুখাদ্য ইত্যাদি অতি অবশ্যক জিনিসপত্রের যোগাড় করলো। সেইসব বিপুল পরিমাণ জিনিস নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার সাথে যোগাযোগ করে নিজেরা গিয়ে বন্যার্তদের হাতে সরাসরি তুলে দিল। যদিও সেই টাকা জমা নিয়ে নাটকও কিছু কম হয়নি। কেউ বলল আমাদের বেতন থেকে তো প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে ট্যাক্স হিসেবে টাকা প্রতিমাসেই জমা পড়ে অতএব আমরা আলাদা করে একটাকাও দিলে গরীব হয়ে যাব। কেউ বলল কাজ কর্ম ছেড়ে দিয়ে এইসব ত্রান-ফান নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে কি হবে? নবরাত্রির পুণ্য সঞ্চয়ের জন্য এঁনারা সক্কালসক্কাল বৌবাচ্চা সহ কপালে হলুদ-সিঁদুর-চন্দন আরো যাবতীয় পূত-পবিত্র তিলক কেটে কাজে আসছেন। মাদুগ্গার পায়ে মাথা খোঁড়ার জন্য এঁনারা সকলেই একপায়ে খাড়া। কোলের বাচ্চাটিকেও ছাড়েন না মন্দিরে মাথা ঠোকবার জন্য। অথচ মাদুগ্গার সত্যিকারের চ্যালাদের অসুরদমন অভিযানে এঁনাদের বিন্দুমাত্র আস্থা নেই।
যাক গে যাক। এইসব তুশ্চু জনগনের কথা এই ভালো দিনে না ভাবাই ভালো। আপাতত সত্যি সত্যি যে দূর্গা মায়ের ঘুম ভেঙ্গেছে আর তাঁর চ্যালাকুল যে প্রবলপ্রতাপে এখনো অসুরদমন আর শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে শিষ্টের পালন করে চলেছে এতেই আমার মনে নতুন করে বেশ আশার উদ্রেক হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন একেবারে মরে যাইনি। এখনো বেঁচেই আছি। আর আমাদের মতন আমজনতার পাশে যদি মা দুগ্গার চ্যালারা এরকম ভাবেই থাকে তাহলে অসুরকুলের মুখে ছাই দিয়ে আরো কিছুদিন বেঁচেবর্তে থাকতে পারব বলেই মনে হচ্ছে। কি বলেন? এই আনন্দে পুজোয় ভালো করে ঠাকুর দেখবেন, ভালোমন্দ খাবেন, ছোটখাটো অসুর চারপাশে দেখতে পাবেনই পাবেন, দেখলেই মা দুগ্গার নাম করে তাদের দমন করার চেষ্টা করবেন। আর কি? সবাই ভালো থাকবেন। শুভ মহাষষ্ঠী।
এদ্দিন মনে হচ্ছিল বুঝি সত্যযুগের মত তেত্রিশ কোটি দেবদেবী আর দুশো কোটি হাভাতে জনগণের সমবেত চিত্কার-চেঁচামেচি ছাড়া মা-দুগ্গার ঘুমও আর ভাঙবে না। অসুরদমনও আর হবে না। মহিষাসুরের তাড়া খেয়ে যেমন দেবতারা কোঁচা সামলে হৃত্পিণ্ড হাতে করে উর্দ্ধশ্বাসে দৌড়াচ্ছিলেন তেমনি আমাদেরও মরতে মরতে দৌড়াতে হবে মোষের শিং-এর খোঁচা থেকে বাঁচতে। এই করতে গিয়ে কিছুদিন আগে পর্যন্ত মনে হচ্ছিল বুঝি মরেই গেছি। আর কোনো মাদুগ্গার ক্ষমতা নেই এই আগাছা পরিষ্কার করার। অসুর ব্যাটারা ঝাড়ে-বংশে এক্সপোনেনশিয়াল রেট-এ বেড়ে বাকিদের ঝাড়ে-বংশে নির্মূল করলো বলে।
কিন্তু ইদানিং কালের পরপর কয়েকটা ঘটনায় মনে হচ্ছে নাহ, বোধহয় এখনো বেঁচেই আছি। এবং আরো কিছুদিন বোধহয় বেঁচে থাকতে পারব। মা দুগ্গা যে নিজে না আসলেও দূর থেকে বেশ কিছু চ্যালা-চামুন্ডা তৈরী করে চলেছিলেন সেটা এবার বেশ বুঝতে পারছি। চ্যালারাই এখন ভরসা। মা দুগ্গার চ্যালা বলে কথা এ কি আর সোজা কথা? এই যেমন ধরুন না কেন মহিষদলের অন্যায়ভাবে ঢুঁশো মারার প্রতিবাদে মা দুগ্গার হাজার-হাজার পুঁচকে চ্যালার দল নিজেদের ডিগ্রী-সার্টিফিকেট-রেকমেন্ডেশন-বিদেশযাত্রা-গবেষনার তোয়াক্কা না করে এই যে সারা দেশ জুড়ে নিজেদের পাঠশালার হেড-পন্ডিতের এবং তত্সহ মহারানীর সংসারের রাঘব-বোয়াল গোছের মাতব্বরদের ঝুঁটি ধরে এমন টানটাই দিল যে ঝুঁটি খুলে আসার উপক্রম প্রায়। ঝুঁটি বাঁচাতে বড়-বড় মহিষদের এখন মা দুগ্গার পায়ের তলায় বসে 'ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি'-গোছের অবস্থা। এতে করে একটা জিনিস পরিষ্কার যে, নিজেরটুকুনি কোলে আঁকড়ে বসে না থেকে, নিজের এবং বাকি সকলের কেবলমাত্র সুস্থভাবে বেঁচে থাকাটুকু সুনিশ্চিত করতে পথে নামার লোক এখনও আছে। তারা কেউ পরবর্তী নির্বাচনের সম্ভব্য প্রার্থী নয় যে 'আমি সত্য পথে জনগণের সাথে আছি' বোঝাতে পথে নেমেছে। দস্তুরমতন পেন-খাতা-পরীক্ষা-গবেষণা ছেড়ে নেমেছে। মনে খানিক বল পেলাম এই চ্যালাদের দেখে। তাহলে এখনো সব ফুরিয়ে যায়নি কি বলেন? এখনো কেরিয়ার কে পাশে রেখে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা যায়!
তারপরে ধরুন দেশের উত্তরতম প্রান্তে বরুনদেবের বাঁধনছেঁড়া খেয়ালিপনায় বন্যা-টন্যা হয়ে একশা কান্ড। বাড়িঘর ভেঙ্গে-রাস্তা, টেলিফোন ব্যবস্থা ধুয়ে মুছে সাফ। খাবার জল বিষিয়ে গেছে। হাসপাতালের দেওয়াল ভেঙ্গে রোগীর বিছানাসমেত ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে জলের তোড়। শিশুখাদ্য-খাবার জল-ওষুধপত্র এই নূন্যতম জিনিসপত্রের যোগান পর্যন্ত নেই। এসব দৃশ্য তো টিভি খবরের কাগজের দৌলতে কারো আর অজানা নয়। আমরা প্রত্যেকেই সন্ধ্যেবেলা বাড়ি ফিরে চা-কফি আর ভালোমন্দ স্ন্যাকস খেতে খেতে 'ইশ কি অবস্থা ওখানে' বলে সেসব দেখছি আর তারপরেই চ্যানেল বা ওয়েবসাইট বদলে আমাদের পছন্দের চ্যানেল বা অনলাইন শপিং সাইটে চলে গেছি। আরো কয়েকমিনিট একটু বেশি খরচ করা যেতে পারে সেটা ভেবেও দেখিনি। অথচ, মাদুগ্গারই আরো একদল চ্যালা, এরাও কিন্তু জীবনের প্রথম পর্বে দাঁড়িয়ে আছে। জীবন-প্রেম-জীবিকা-ডিগ্রী-পরীক্ষা-বিদেশ যাত্রা এসব নিয়েই ব্যস্ত থাকতে পারত। হয়ত আছেও। কিন্তু মাদুগ্গার চ্যালা কিনা, তাই আমাদের চেয়ে জীবন, সময় সবকিছুরই যথার্থ ব্যবহারটা জানে। তারা কিনা নিজেদের মধ্যে-বন্ধুবান্ধব মধ্যে-তাদের বন্ধুবান্ধব-নিজেদের ইউনিভার্সিটি-বন্ধুদের ইউনিভার্সিটি-রিসার্চ ইনস্টিটিউট সব জায়গা থেকে সকলের কাছে আবেদন করে টাকা পয়সা জড়ো করলো। পুরো দিল্লি চত্ত্বরে কম ইউনিভার্সিটি-ইনস্টিটিউট নেই। সেই ঢেউ বন্ধু-তার বন্ধু-তার বন্ধু পরিবাহিত হয়ে আমাদের এই অজগাঁয়ের ইনস্টিটিউটেও এসে পৌঁছালো। প্রত্যেকেই নিজেদের সাধ্যমতো টাকাপয়সা দিল। এখান থেকে সেই টাকাপয়সা দিল্লির পাঁচমাথার মোড়ে গিয়ে জমা হলো। সেই টাকায় খাবারদাবার-পানীয় জল-ওষুধপত্র-শিশুখাদ্য ইত্যাদি অতি অবশ্যক জিনিসপত্রের যোগাড় করলো। সেইসব বিপুল পরিমাণ জিনিস নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার সাথে যোগাযোগ করে নিজেরা গিয়ে বন্যার্তদের হাতে সরাসরি তুলে দিল। যদিও সেই টাকা জমা নিয়ে নাটকও কিছু কম হয়নি। কেউ বলল আমাদের বেতন থেকে তো প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে ট্যাক্স হিসেবে টাকা প্রতিমাসেই জমা পড়ে অতএব আমরা আলাদা করে একটাকাও দিলে গরীব হয়ে যাব। কেউ বলল কাজ কর্ম ছেড়ে দিয়ে এইসব ত্রান-ফান নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে কি হবে? নবরাত্রির পুণ্য সঞ্চয়ের জন্য এঁনারা সক্কালসক্কাল বৌবাচ্চা সহ কপালে হলুদ-সিঁদুর-চন্দন আরো যাবতীয় পূত-পবিত্র তিলক কেটে কাজে আসছেন। মাদুগ্গার পায়ে মাথা খোঁড়ার জন্য এঁনারা সকলেই একপায়ে খাড়া। কোলের বাচ্চাটিকেও ছাড়েন না মন্দিরে মাথা ঠোকবার জন্য। অথচ মাদুগ্গার সত্যিকারের চ্যালাদের অসুরদমন অভিযানে এঁনাদের বিন্দুমাত্র আস্থা নেই।
যাক গে যাক। এইসব তুশ্চু জনগনের কথা এই ভালো দিনে না ভাবাই ভালো। আপাতত সত্যি সত্যি যে দূর্গা মায়ের ঘুম ভেঙ্গেছে আর তাঁর চ্যালাকুল যে প্রবলপ্রতাপে এখনো অসুরদমন আর শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে শিষ্টের পালন করে চলেছে এতেই আমার মনে নতুন করে বেশ আশার উদ্রেক হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন একেবারে মরে যাইনি। এখনো বেঁচেই আছি। আর আমাদের মতন আমজনতার পাশে যদি মা দুগ্গার চ্যালারা এরকম ভাবেই থাকে তাহলে অসুরকুলের মুখে ছাই দিয়ে আরো কিছুদিন বেঁচেবর্তে থাকতে পারব বলেই মনে হচ্ছে। কি বলেন? এই আনন্দে পুজোয় ভালো করে ঠাকুর দেখবেন, ভালোমন্দ খাবেন, ছোটখাটো অসুর চারপাশে দেখতে পাবেনই পাবেন, দেখলেই মা দুগ্গার নাম করে তাদের দমন করার চেষ্টা করবেন। আর কি? সবাই ভালো থাকবেন। শুভ মহাষষ্ঠী।