Monday, 27 March 2017

চাহিদা




ক্ষুধার প্রয়োজনে অন্নসংগ্রহ, 
অন্ন অন্বেষণের ক্লান্তিতে নিদ্রা, 
আর শারীরিক প্রয়োজনে মৈথুন 
শুনেছি আদিকালে এই ছিল 
জীবনের চাহিদা। 

এই তিন চাহিদা পূরিত করে, 
অনায়াস অর্জিত শান্তিতেই যাপিত হচ্ছিলো
আদিমানবীর জীবন। 

তারপর, কেমনকরে যেন, 
কোন এক দুর্বিপাকে, 
ক্ষনিকের জন্য 
শান্ত জলাশয়ে বিম্বিত হলো 
তারই শ্যামলী মুখচ্ছবিখানি।
প্রেমে পড়লো সে তার আপন লালিমার। 
আর সেই প্রাগৈতিহাসিক মুহূর্তে 
রচিত হলো বুঝি 
আত্মরতির ইতিহাস। 

কেবল আহার- নিদ্রা- মৈথুনে 
শান্ত রইল না জীবন।
কেবলই ভালোবাসতে ইচ্ছে হলো 
সেই প্রাগৈতিহাসিনীর। 
ক্রমশঃই সেই নব জাগরিত নরম প্রেম, 
সঞ্চারিত হয়ে চললো দিগন্তের দিকে। 
এতদিনে তার প্রয়োজন পড়েছে প্রসাধনীর।
আলুলায়িত রুক্ষ কেশপুঞ্জ 
শাসিত হয়েছে নবকবরীর আল্পনায়। 
বসন্তে সেখানে উঠেছে 
রক্ত-পলাশগুচ্ছ।  
সে পলাশ তার কানে দিয়েছে 
তার প্রিয় আদিমানবের সুরের সন্ধান। 
শিহরিত হয়েছে তার গলার ঝিনুকমালা।
দিগন্তরেখা স্পর্শ করতে গিয়ে 
অনন্ত সেই প্রেম, 
ছুঁয়েছে আদিমানবের হৃদয়। 
আর সেই ক্ষনেই রচিত হয়েছে 
যুগলজীবনের নতুন চাহিদা। 

সৌন্দর্যপ্রিয়তার চাহিদা। 
জীবনের সৌন্দর্যরূপ 
পরস্পরে ভাগ করে নেওয়ার চাহিদা। 
কেবল বেঁচে থাকার জন্য নয়, 
ভালবাসার জন্য বেঁচে থাকার চাহিদা।

আর সেদিন থেকেই 
আহার- নিদ্রা- মৈথুনকে 
যোজনক্রোশ পিছনে ফেলে-
দীপ্যমান হয়ে দাঁড়িয়েছে 
জীবনের উজ্জ্বলতম চাহিদা, 
ভালবাসা।।


0 comments:

Post a Comment