Thursday, 31 December 2015

ধোঁয়ার গন্ধ

বাড়িতে একটা ঘর আছে, সেখানে দুটো মাটির উনুন আছে। যদিও চলতি কথায় তাদের কাঠের উনুন বলে ডাকা হয়। কারণ কাঠ কুটো জ্বাল দিয়ে সেখানে রান্নার ব্যবস্থা। অনেক আগে এগুলিই ছিল আমাদের বাড়ির একমাত্র রান্নাবান্নার ব্যবস্থা। সময়ের সাথে সাথে কাঠের উনুন থেকে গুল-কয়লার আঁচের উনুন, পাম্প দেওয়া স্টোভ-পাম্প না দেওয়া স্টোভ-গ্যাস-ইনডাকশন ওভেন পর্যন্ত বিবর্তিত হয়েছে আমার মায়ের হেঁসেল। কিন্তু সে ঘর- সে উনুন এখনো আছে তার অটুট স্বাস্থ্য নিয়ে। সে উনুন ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানির জোগাড়ও আছে। প্রতিদিনের অল্প ব্যবহারের সাথে সাথে এখনো বছরের দুটো দিন তারা মহানায়ক এর ভূমিকা পালন করে। কিন্তু যে কথাটা বলতে ইচ্ছে করছে সেটা এই উনুন নিয়ে নয়, উনুন এর ধোঁয়া নিয়ে।      

অনেক ছোট্টবেলার কথা মনে পড়ে। বিনা কারণে হাঙ্গরের মত হাঁ করে কান্নাকাটি আর আদরে-আহ্লাদীপনার বিলাসিতার পর্ব পার করে এসে তখন সদ্য স্লেট-পেন্সিলে পড়েছি। সকাল-বিকেল পড়তে বসা রান্নাঘরে। কারণ মায়ের তাতেই সুবিধা। একখানা আসন ছিলো, মায়েরই হাতে বোনা। সবুজ রঙের উল দিয়ে চৌখুপি-মধ্যে আট পাপড়িওয়ালা লাল উলের ফুল। ধারগুলো মায়ের শাড়ির পাড় কেটে বাঁধানো। আমার পড়তে বসার আসন। আর বইখাতা বলতে, একখানা নামতার বই, বর্ণপরিচয়, হাসিখুশি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্যবই, সঙ্গে আমার অধিকারে থাকা কথামালা, ঈশপ-এর গল্পের একরঙ্গা ছবির বই -ইত্যাদি সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ সম্পত্তি নিয়ে রান্নাঘরে গিয়ে হাজির হতাম সকাল বিকেল। তারপর ঘন্টা দুই তিন রাম-রাবণের যুদ্ধ সেরে যখন আবার পাততাড়ি গুটিয়ে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আসতাম ততক্ষণে ফ্রকের ঝুল দিয়ে ভিজে চোখ মুছতে গিয়ে কেমন একটা গন্ধ পেতাম।  ধোঁয়ার গন্ধ। সেই একই গন্ধ পেতাম মায়ের শাড়িতে রাতের বেলা মাকে আস্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে শোবার সময়। 

শীতের দুপুরে বেলাশেষের আগে তড়িঘড়ি রাতের রান্নাবান্না সেরে ঘরে ঢুকে পড়ার একটা তাড়া থাকত সব বাড়িতেই। প্রায় সমস্ত বাড়িতেই তখন রান্নাঘরগুলো ছিল বাড়ির বাইরের দিকে। শীতকালে আশেপাশের সমস্ত বাড়ি থেকেই তাই শীতের বিকালবেলা বেরিয়ে আসতো ধোঁয়া। সঙ্গে ধোঁয়ার গন্ধ। ভারী হয়ে ভেসে থাকত, আস্তরণ তৈরী করত আমাদের খেলার মাঠের ওপর। শীতকালে খেলতে যাবার আগে জুতো-মোজা, হলুদ-কালো হনুমান টুপির সাথে আবশ্যক ছিল বোরোলিন বা পন্ডস কোল্ড ক্রিম। সুতরাং শীতের ছোট্ট বিকেলে বাড়ির পাশের খামারে বৌবসন্ত বা পিট্টু খেলার আর বোরোলিন বা পন্ডস কোল্ড ক্রিমের গন্ধের সাথে মিশে গেছে সেই গন্ধ। ধোঁয়ার গন্ধ। অঘ্রাণে ধান কাটা হলে, আমাদের বৌবসন্ত বা পিট্টু খেলার জায়গা দখল করে তিনচারটে বাড়ির ধানের গাদা বসত খামারে। আমাদের তখন ধানের গাদার ফাঁকে ফোঁকরে লুকোচুরি খেলার দিন। আর আমাদের সাথে পাল্লা দিতে তখন সব বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসা ধোঁয়ারাও একজোট হয়ে স্তরে স্তরে কুন্ডলী পাকিয়ে ঘুরে বেড়াত ধানের গাদাগুলোর ফাঁকে-ফোঁকরে। পুরনো হিন্দি সিনেমায় স্বপ্নের দৃশ্য দেখাবার জন্য যেমন ধোঁয়ার একটা আস্তরণ তৈরী করা হয়, প্রায় তেমনি একটা দৃশ্য তৈরী হত খামারে। তফাৎটা এই যে এক্ষেত্রে ধোঁয়াটা পায়ের দিকের জায়গায় মাথার ওপরে। তার মাঝে লুকোচুরি খেলার চোরের গলায় ভেসে আসত "অমুক, এক পাঁচ"। এই "এক পাঁচ" কথাটা যে ঠিক কেন বলা হত তা আমি জানি না আজও।কথার মানে, অমুক নামের লোকটি নিজেকে আড়ালে রাখতে পারল না। আর আমি তখন অন্য আর একটি ধানের গাদার পিছনে নিজেকে লুকিয়ে রেখে ধোঁয়া আর কখনো কখনো তার সাথে মিশে আসা সরুচাকলি পিঠের গন্ধ নিচ্ছি। 
সরুচাকলি বানাতো মা। এখনো বানায়। গ্যাসের ওভেনে। তাই তাতে কখনো ধোঁয়ার গন্ধ হয় না আর। আগে মাঝে মাঝে পেতাম। সাথে দুই এক টুকরো ছোট্ট পোড়া কুটো। উনুনের অবদান। রাতের রান্না সেরে পড়ন্ত উনুনে রাখা থাকত একহাঁড়ি ভর্তি জল। ধিকিয়ে ধিকিয়ে যতটুকু উত্তাপ সে দেবে তা রাতে খাবার শেষে মুখ হাত ধোবার জন্য ওই এক হাঁড়ি জল গরম হবার পক্ষে যথেষ্ট। আর মাঝে মাঝে ওই পড়ন্ত উনুন এর পাশে বসত পড়ার আসর। উনুনের গরমে আরামদায়ক হয়ে থাকত রান্নাঘরটা।
  
কুড়ি-পঁচিশ বছর আগেকার ধোঁয়ার গন্ধমাখা শীতের বিকেলবেলার কথা আজ মনে পড়িয়ে দিল সামান্য এক চিমনির ধোঁয়া। বাইরে শীতের হাওয়া। পাশের বিল্ডিং এর চিমনি থেকে গলগলিয়ে বেরিয়ে আসছিল সাদা ধোঁয়া। উনুনের নয় নিঃসন্দেহে। এরা কাঠ পুড়িয়ে রান্না করে না আর। আমিও ছিলাম। বিকেলের খেলার সঙ্গীদের সাথে ধানের গাদায় লুকোচুরি খেলার মাঠে নয়, কোনো এক কাজ পালানো অবসরে ঢাকা দেওয়া কাগজের কাপে বিস্বাদ কফি সঙ্গী করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আরামদায়ক কাফের কাঁচের জানলার পাশের চেয়ারে বসে। বোরোলিন-সরুচাকলি মাখা ধোঁয়ার গন্ধের বদলে বাতাসে ছিল চীজ-মায়োনিজ-কফির মিশ্র গন্ধ। তবুও কেন যে একশো কথার ফাঁকে মনে পড়ে গেল সেই ধোঁয়া মাখা বিকেলগুলোর কথা কে জানে। কফির গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে দেখছিলাম গলগলিয়ে বেরিয়ে আসা ধোঁয়ারা ব্যস্ত হয়ে হুড়মুড়িয়ে উঠে যাচ্ছে ওপর দিকে। কোনো সমান্তরাল আস্তরণ তৈরী না করেই। হয়ত এখানে ধানের গাদায় লুকোচুরি খেলার কেউ নেই বলেই। হয়ত খেলতে খেলতে ধোঁয়ার সাথে সরুচাকলি পিঠের গন্ধ নেবার কেউ নেই বলেই। কে জানে।         
       

Saturday, 12 December 2015

আটপৌরে

আটপৌরে কথাটা প্রথম শিখি মায়ের শাড়ী পরা থেকে। আমার মা বাড়িতে 'আটপৌরে করে' শাড়ী পরে। ছোটবেলা থেকেই দেখতাম  কোথাও বেরোতে গেলে সেই শাড়ীতে কেমন করে যেন গজিয়ে উঠতো বেশ কয়েকটা কুঁচি। আর বাঁদিক এর কাঁধ থেকে ভাঁজ খেয়ে উঠে যাওয়া মাথার অর্ধেকটা চাপা দেওয়া ঘোমটাটা ডানদিকের কনুই পর্যন্ত এসে থমকে গেছে। অর্থাৎ সাধারণত ভারতীয় মহিলারা যে কয়জন এখনো শাড়ী পরেন তাঁদের সিংহভাগ এখনো যেভাবে পরেন আর কি। আর বাড়িতে থাকলে মায়ের ওই কুঁচিটা বেমালুম উধাও হয়ে যায়। আর সেই বাবদ বেঁচে যাওয়া কাপড়টা কয়েকপাক এদিক ওদিক ঘুরে সোজা বাঁকাঁধে। সেখানে থেকে আর ভাঁজ খেয়ে ঘোমটা আকারে মাথায় না উঠে বাঁদিকের পিঠ বেয়ে ডান হাতের তলা দিয়ে পাক খেয়ে আবার বাঁকাঁধে। এইটি হলো 'আটপৌরে করে শাড়ী পরা।' আটপৌরে শব্দটি আমার শেখা এখান থেকেই। ফলত এই শব্দটার সঙ্গে একটা যেমনতেমন করে থাকা বা নিজের প্রতি যত্ন না নিয়ে যাহোক করে কোনো কিছু করার একটা সংযোগ আমার মনে গেঁথে গেছিল ছোটো বয়সে। মনে আছে মাকে আমি অনেকবার বলেছি ছোটবেলায় যে কাকিমার (আমার বন্ধু রুমার মা) মতন করে শাড়ী পড়তে পারো না? মা বলত কেন পরি তো বাইরে গেলে। আমার তর্ক ছিল-'কেন? কাকিমা তো বাড়িতেও ওরকম করে পরে, তুমিও পরবে।' মায়ের যুক্তি ছিল-'এই তো বেশ আছি', বা -'এরকম করে পরে আরাম', বা 'জ্যাঠিমাদের দেখেছিস কখনো বাড়িতে ওরকম করে শাড়ী পড়তে' (আমার জ্যাঠিমারা সকলেই মায়ের মত ফর্মুলায় বা বলা ভালো মা জ্যাঠিমাদের মত একই ফর্মুলায় বাড়ি এবং বাইরের শাড়ী পরার পদ্ধতি অনুসরণ করতেন/করেন।)? কোনটিই বিশেষ জোরালো যুক্তি নয়। সুতরাং ওসব যুক্তি আমার কাছে বিশেষ গ্রাহ্য হত না। কেবলই মনে হতো শাড়ী পরার ধরনের সঙ্গে সঙ্গে মা-টিও এই বুঝি বাকিদের থেকে আটপৌরে হয়ে গেল।  হলেও যে বিশেষ লাভ ক্ষতি নেই সে হিসেব বোঝার বয়স তখন আমার হয়নি। মোদ্দাকথা 'আটপৌরে' শব্দটিই এমন একটি চোখে না পড়া-যেমনতেমন-হালকা গুরুত্বহীন চেহারা নিয়ে আমার কাছে এসেছিল যে, সেই আমির পক্ষে মাকে আটপৌরের বাঁধন থেকে উদ্ধার না করলেই চলছিল না। সুতরাং সেই এক বিষয় নিয়ে মাঝে মাঝেই ঘ্যানঘ্যান করতে থাকতাম। আর মাও মেজাজ-মর্জি অনুযায়ী কখনো মুচকি হেসে কখনো এক ধমকে আমায় থামিয়ে দিত। তারপর স্কুলের শেষের দিকে কোনো এক বিয়ে বাড়িতে দেখলাম কনের খুব কাছের একজন মহিলা অত্যন্ত মহার্ঘ্য একটি শাড়ী আমার মায়ের বাড়িতে পরা সেই সাধারণ- যেমন তেমন-নজরে না পড়া শাড়ীপরার ধরণে পরেছেন, এবং বিয়েবাড়ি শুদ্ধু ফ্যাশনে অভিজ্ঞ মহিলাকুল তাঁকে উচ্চপ্রশংসা করছেন। সম্ভবত সেদিন থেকেই মায়ের শাড়ী পরা নিয়ে আমার অভিযোগ কমতে থাকলো। আর তারপর আস্তে আস্তে বড় হতে হতে 'আটপৌরে' শব্দটির আক্ষরিক এবং অন্তর্নিহিত অর্থ যত আমার কাছে পরিস্কার হতে থাকলো ততই মায়ের বাড়িতে শাড়ী পরার ধরন নিয়ে আমার অভিযোগ কমতে কমতে শেষে কখন যে উধাও হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না। আর এখন তো বিয়ের কনেরাও ফ্যাশনের রাস্তায় উল্টো মুখে হেঁটে আবার পুরনো রীতি অনুসরণ করে আমার মায়ের মতন করে শাড়ী পরে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন। সুতরাং এখন তো এ নিয়ে আমার আর কোনো কথাই নেই। তবুও এখনো আটপৌরে শব্দটা কোথাও পড়লে মায়ের এই শাড়ী পরার ধরনটি এবং সেই সংক্রান্ত আমার অভিযোগ এর কথা আমার মনে পড়ে যায়।   

মায়ের শাড়ী আর আমার ছোটবেলার ধারণা নিয়ে যখন কথা উঠলো তখন আরো একটা কথা মনে পড়ে গেল। মায়ের চিরকালের পছন্দ হালকা রঙের শাড়ী। তাই মায়ের যত্সামান্য শাড়ীর ভান্ডারের অধিকাংশই সাদা-ধূসর-বা এদের আশেপাশের চোখ আরাম দেওয়া অন্য রং এর শাড়ী। জরি-চুমকি তো নৈব নৈব চ। এদিকে আশেপাশের সকলকে দেখি বড় বড় রঙিন ফুলপাতা আঁকা-চকমকে শাড়ীতে। সেটিও আমার আরো একটা ঘ্যানঘ্যানানির বিষয় ছিল মায়ের কাছে। সেই আটপৌরে রং আর পোশাকি রং এর ঝগড়া। বাচ্চা মানুষের বুদ্ধি আর কি। বয়স এর সাথে সাথে কখন যে আমার নিজের কেনা জামা বা মায়ের জন্য কেনা শাড়ীর রংও যে সাদা-ধূসর বা এদের আশেপাশের চোখ আরাম দেওয়া অন্য রং এ বদলে গেছে নিজেও বুঝতে পারিনি।

ভালো লাগা বা কোনো একটি বিশেষ বস্তু বা বিশেষ বিষয়ের প্রতি মানুষের ধারণা বদলে যাওয়াটা শ্বাস গ্রহণ বর্জন এর মত এতটাই স্বাভাবিক ঘটনা সে কখন যে আস্তে আস্তে সে বিষয়বস্তুর প্রতি আমাদের ধারণা বদলাতে বদলাতে বেমালুম উল্টোমুখে চলতে শুরু করে যে আমরা নিজেরাই অবাক হয়ে যাই যে, কোনো এক সময় এই বিষয়টি আমরা এভাবে দেখতাম! বা বিষয়টি আমাদের চোখে এতটাই স্বাভাবিক বা আটপৌরে ছিল সে সম্পর্কে কোনদিন ভেবেও দেখার প্রয়োজন অনুভব করিনি। অথচ আজ সে বিষয়টি তার মহত্ব নিয়ে এমন ভাবে রাস্তা আড়াল করে দাঁড়িয়েছে যে এতবড় বিষয়টি থেকে কি করে এতদিন চোখ বন্ধ করে ছিলাম সেকথা ভেবে লজ্জা পেতে হয়। সে বিষয়টি তখন আটপৌরে থেকে একধাক্কায় রীতিমত পোশাকি হয়ে ওঠে। আর উল্টোদিকে এমন কিছু বিষয় নিয়ে এতদিন নিজের মধ্যেই ঘ্যানঘ্যানানি পুষে রাখতাম সে যেন রীতিমত পোশাকি ব্যাপার। বিলাসিতার মত। প্রয়োজনমতো মনের আলমারি থেকে ন্যাপথলিনের গন্ধ মাখা সাধের দুঃখ তুলে এনে খানিক কান্নাকাটি করে আবার তাকে তুলে রাখা। যে মুহূর্ত থেকে সত্যি সত্যি মন বুঝতে পারলো যে, বিষয়টি কেবলমাত্র পোশাকি বাহুল্য ছাড়া আর কিছু নয়, অমনি সে তার সমস্ত পোশাকিত্ব হারিয়ে ঝুপ করে বাড়ির আলনায় রাখা আটপৌরে শাড়ীটি হয়ে পড়ল। গায়ে জড়িয়ে আরাম। তখন তাতে অবলীলায় হলুদ মাখা হাত মুছে ফেলা চলে। তার পর ধীরে ধীরে রোজকারের ব্যবহারে ছিঁড়ে-রং উঠে- ঘরমোছা ন্যাতা হয়ে শেষে কবে যে মনের সংসার থেকে বিদায় নিল মন জানতেও পারল না। 

এই আটপৌরে থেকে পোশাকি আর পোশাকি থেকে আটপৌরেতে ধ্যান-ধারণার ধীর কিন্তু অবিচল পরিবর্তনের স্রোতটির সঙ্গে খাবি খেতে খেতে চলতে চলতে মনে হয়, এখনো যেসব ঋণাত্মক অনুভূতিগুলি সযত্নে ন্যাপথলিন এর টুকরো দিয়ে পোশাকি আলমারিতে তুলে রেখেছি, দরকার মত বের করে এনে বিলাসিতা করব বলে, সেগুলো হঠাত করে এক ধাক্কায় যদি জাদুমন্ত্রবলে টেনে বের করে এনে আটপৌরে আলনায় ফেলা যেত বেশ হত। জীবনের নিজস্ব নিয়মেই সে একদিন রোজকারের ব্যবহারে ছিঁড়ে-রং উঠে- ঘরমোছা ন্যাতা হয়ে শেষে কবে যে মনের সংসার থেকে বিদায় নিত মন জানতেও পারত না। ওই পোশাকিত্বের মায়া কাটিয়ে আটপৌরে আলনায় টেনে বের করে আনাটাই আসল কথা। বাকিটা আপনিই হয়ে যায়।  দেখা যাক।